শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ডিএনসিসির নাগরিক পদক ২০২৫: শহরের উন্নয়নে অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা

ঢাকা শহরকে একটি বাসযোগ্য ও সচেতন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রথমবারের মতো “নাগরিক পদক ২০২৫” প্রদান করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এই পদকের মাধ্যমে নগর উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, সামাজিক সেবা, শিক্ষাক্ষেত্র, কনটেন্ট নির্মাণ ও উদ্ভাবনী উদ্যোগে ভূমিকা রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

ডিএনসিসি জানিয়েছে, “আমার শহর, আমার দায়িত্ব”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে একটি দায়িত্ববান ও অংশগ্রহণমূলক নাগরিক সমাজ গড়ে তোলাই এই পুরস্কার প্রদানের অন্যতম লক্ষ্য। নগর উন্নয়নে যাঁরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছেন, তাঁদের স্বীকৃতি দিয়ে অন্যদেরও উৎসাহিত করাই এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য।

নাগরিক পদক বিষয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “নাগরিক উদ্যোগ, পরিবেশবান্ধব চিন্তা ও সামাজিক দায়িত্ববোধকে উৎসাহিত করলেই একটি টেকসই নগর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব। তরুণ প্রজন্মকে সামাজিক নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনী উদ্যোগে সম্পৃক্ত করতে এই পদক কার্যকর ভূমিকা রাখবে।” তিনি আরও বলেন, “শুধু সম্মাননা নয়, ভবিষ্যতে এই পদকপ্রাপ্তদের সিটি কর্পোরেশনের নীতিনির্ধারণী কর্মকাণ্ডেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।”

ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ছয়টি বিভাগে মোট ৩০ জন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নাগরিক পদক প্রদান করা হবে। ব্যক্তি উদ্যোগ, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ব্যবসা, মিডিয়া ও কনটেন্ট নির্মাতা, উদ্ভাবক ও স্টার্ট-আপ—সবক্ষেত্রেই মনোনয়ন নেওয়া হবে। যাঁরা শহরের জন্য ইতিবাচক ও সৃজনশীল ভূমিকা রেখে চলেছেন, তাঁদেরই পুরস্কৃত করা হবে।

মনোনয়নের জন্য আবেদন চলতি মাস থেকেই ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে গ্রহণ করা হবে। আবেদনকারীদের নির্ধারিত ফরমে তাদের প্রকল্প বা কার্যক্রমের বিবরণ, ছবি ও ভিডিওসহ আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি স্ক্রুটিনি কমিটি এবং পরবর্তী ধাপে একটি জুরি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ডে থাকবেন নগর পরিকল্পনাবিদ, শিক্ষাবিদ, মিডিয়া প্রতিনিধি, সমাজসেবক এবং ডিএনসিসির একজন সাবেক কর্মকর্তা।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের দেওয়া হবে একটি সম্মানসূচক ক্রেস্ট, মেডেল, সিটি কর্পোরেশন অনুমোদিত সনদপত্র ও প্রতীকী আর্থিক সম্মাননা। পাশাপাশি বিজয়ীদের কার্যক্রম গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হবে, যাতে তাদের অবদান সমাজে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে।

ডিএনসিসি জানিয়েছে, যে কোনো বয়স, পেশা বা লিঙ্গের বাংলাদেশি নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান এ পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে সক্রিয় রাজনীতিক কিংবা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই পদকের জন্য বিবেচিত হবেন না।

পুরস্কার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে মনোনয়ন ও বাছাইসংক্রান্ত সব তথ্য এবং কমিটির সদস্যদের পরিচয় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

ডিএনসিসির পক্ষ থেকে নগরবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানানো হয়েছে—শহরের জন্য আপনি যা করছেন, তা সমাজের সামনে তুলে ধরুন। নাগরিক পদক শুধু পুরস্কার নয়, এটি একটি স্বীকৃতি—যেখানে দায়িত্ব থেকেই জন্ম নেয় গৌরব।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন