বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস

ব্রিটিশ দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (FT)-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫ লাখ কোটি টাকা) পাচার হয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত “Bangladesh’s Missing Billions: Stolen in Plain Sight” শীর্ষক ডকুমেন্টারিতে এই তথ্য উঠে আসে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। ওভার-ইনভয়েসিং ও আন্ডার-ইনভয়েসিং, হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর এবং বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগকে পাচারের মূল পদ্ধতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

যুক্তরাজ্যে বিপুল সম্পদ বিনিয়োগ

ডকুমেন্টারিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্য হয়ে উঠেছে অর্থ পাচারের অন্যতম কেন্দ্র। লন্ডনের আর্থিক খাত ও আবাসন বাজারে বাংলাদেশ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে ৩০০টির বেশি সম্পত্তি থাকার অভিযোগও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্রিটিশ অপরাধ দমন সংস্থা (SCA) ইতোমধ্যে শতাধিক সম্পত্তি জব্দ করেছে বলে দাবি করা হয়।

এছাড়া শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং তার মেয়ে, যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের নামও উঠে এসেছে। তবে এ অভিযোগগুলো বিচারাধীন এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকার অভিযোগ

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হাসিনা সরকারের সময় সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংকগুলো দখল করা হয় এবং অস্ত্রের মুখে পরিচালকদের পদত্যাগে বাধ্য করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে বিপুল অর্থ পাচার করা হয়।

প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এত বড় অঙ্কের অর্থ ফেরত আনা কঠিন হলেও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে আংশিক পুনরুদ্ধার সম্ভব। তবে সরকারপন্থি মহল এ ধরনের অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ খুঁজে বের করতে তদন্ত কার্যক্রম চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন