বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

প্রতিবছর বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ১১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ: ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন

ঢাকা, ২২ জুন ২০২৫ (রবিবার):

প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ লাখ ৯০ হাজার সড়ক ব্যবহারকারী প্রাণ হারান বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। এই তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের রোড সেফটি প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান, রবিবার (২২ জুন) রাজধানীর শ্যামলীতে আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায়।

“সড়ক নিরাপত্তা আইন সকলের জন্য প্রয়োজন” শীর্ষক এই আলোচনায় শারমিন রহমান আরও জানান, বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ৯২ শতাংশই ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে। বিশেষ করে পথচারী, সাইকেল ও মোটরসাইকেল আরোহীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। ওয়ার্ল্ড হেলথ র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৩টি দেশের মধ্যে ১০৬তম।

তিনি বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সঠিক আইন প্রণয়ন এবং তার কার্যকর বাস্তবায়ন জরুরি। এই আইন ছাড়া রোডক্র্যাশ কমানো সম্ভব নয়। তাই একটি সমন্বিত ও কার্যকর ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ সকলের জন্য প্রয়োজন।”

অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন দৈনিক মানবজমিনের সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার শুভ্র দেব। আলোচনায় অংশ নেন:

  • মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক, শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ) ও ইউএনবির বিশেষ প্রতিনিধি
  • জামিউল আহ্ছান শিপু, সিনিয়র সাংবাদিক, দৈনিক ইত্তেফাক
  • ইমন রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক (ক্রাইম), দৈনিক যুগান্তর

তাঁরা বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা ২০২২ মূলত পরিবহন খাত কেন্দ্রিক। কিন্তু সড়ক নিরাপত্তার ব্যাপারে এতে পরিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি নেই। সড়ক অবকাঠামো, যানবাহনের মান, পথচারীর নিরাপত্তা এবং দুর্ঘটনার পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অগ্রাহ্য করা হয়েছে।

এ সময় বক্তারা পৃথক একটি ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের দাবি জানান যা দেশের সড়কে সব ধরনের ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

সভায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান। তিনি বলেন, জাতিসংঘ প্রস্তাবিত ৫টি স্তম্ভ—

১. বহুমুখী যানবাহন ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা

২. নিরাপদ যানবাহন

৩. নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো

৪. নিরাপদ সড়ক ব্যবহার

৫. রোডক্র্যাশ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা

—এই বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রেখে একটি সমন্বিত ও আধুনিক সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।