শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ন্যাশনাল মেডিকেলের সামনে গুলিতে নিহত ব্যবসায়ী ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন

রাজধানীর সূত্রাপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গুলিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন তারিক সাইফ মামুন (৫৫)—যিনি পুলিশের তথ্যমতে রাজধানীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং একাধিক হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি ছিলেন।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে অজ্ঞাত কয়েকজন দুর্বৃত্ত মামুনের ওপর গুলি চালায়। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন দুপুরের দিকে।

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলের ওয়ার্ড মাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, “সকাল ১১টার দিকে গুলির শব্দ শুনে বাইরে যাই। দেখি, হাসপাতালের মেইন গেটের সামনে এক ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়, যেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের উপকমিশনার আহসান উদ্দিন সামি বলেন, “নিহত মামুন রাজধানীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর নামে একাধিক হত্যা ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পূর্বপরিকল্পিত টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা। হামলাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।”

নিহতের পরিচিত ফাইজুল হক অপু জানান, সকালে মামুনের ফোন থেকেই তাঁকে কল করা হয় এবং গুলির ঘটনার কথা জানানো হয়। এরপর তিনি কাকরাইল থেকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে মামুনের মরদেহ শনাক্ত করেন। তাঁর ভাষায়, “নিহতের নাম তারিক সাইফ মামুন। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন। এর আগে গাজীপুরে আমাদের পরিচয় হয়েছিল।”

নিহতের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, তাঁর পিতার নাম এস. এম. ইকবাল এবং স্থায়ী ঠিকানা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মোবারক কলোনি এলাকা।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং হামলাকারীদের শনাক্তে কাজ করছে তদন্ত দল।

গুলির ঘটনার পর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে এবং স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ চালায়।

ডিএমপি জানিয়েছে, হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে করে এসে খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পুলিশের একাধিক টিম এখন ঘটনাটি তদন্ত করছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন