শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

৯ মাসে ৩৩ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা, মুনাফায় ৪৬ শতাংশ পতন বিএটিবিসির

চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করেছে বহুজাতিক সিগারেট উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি)। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৭ শতাংশ। তবে বিক্রি বাড়লেও কোম্পানির মুনাফা কমেছে প্রায় ৪৬ শতাংশ।

কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে বৃহস্পতিবার ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বিএটিবিসির মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা, যা গত বছর ছিল ৩০ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা।

মুনাফা কমেছে প্রায় ৬০৩ কোটি টাকা

আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে কোম্পানির নিট মুনাফা ছিল ১,৩২৩ কোটি টাকা, যা চলতি বছরে নেমে এসেছে ৭২০ কোটিতে—অর্থাৎ ৬০৩ কোটি টাকা বা প্রায় ৪৬ শতাংশ হ্রাস।

বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মুনাফা হ্রাসের মূল কারণ হলো সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বৃদ্ধি। একইসঙ্গে কারখানা ও প্রধান কার্যালয় স্থানান্তরে ব্যয়ও মুনাফায় বড় প্রভাব ফেলেছে।

শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ খরচ বেড়েছে ১৪ শতাংশ

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে বিএটিবিসির সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ খরচ হয়েছে ২৭ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৩ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ শুল্ক ও কর বাবদ ব্যয় বেড়েছে ৩ হাজার ২৯০ কোটি টাকা (প্রায় ১৪ শতাংশ)।

বিক্রি বৃদ্ধির তুলনায় কর ও শুল্কের পরিমাণ বেশি হওয়ায় প্রকৃত আয়ে উল্লেখযোগ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

কারখানা স্থানান্তরে খরচ ২১২ কোটি টাকা

২০২৫ সালের জুনে বিএটিবিসি তাদের দীর্ঘদিনের মহাখালী কারখানা ও অফিস সাভারের আশুলিয়ায় স্থানান্তর করে।

এতে কোম্পানির ব্যয় হয় ২১২ কোটি টাকার বেশি।

প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৬০ বছর পর রাজধানী থেকে উৎপাদন ইউনিট স্থানান্তর করে, যা আর্থিকভাবে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে চলতি প্রান্তিকে।

জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যবসা ও মুনাফা

২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটি ৯ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে, যা গত বছরের একই প্রান্তিকে ছিল ৮ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।

তবে মুনাফার ক্ষেত্রে পতন অব্যাহত—এই সময়ে কোম্পানির নিট মুনাফা ৩০৫ কোটি টাকা, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৯৭ কোটি টাকা।

বিএটিবিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরে কর কাঠামো ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি সত্ত্বেও ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এবং বাজার শেয়ার ধরে রাখাই এখন মূল অগ্রাধিকার।

বিশ্লেষকদের মতে, যদি আগামী বাজেটে কর কাঠামো অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে ২০২৬ সালে কোম্পানির মুনাফা কিছুটা পুনরুদ্ধার হতে পারে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন