শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

দ্রুত ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তবায়নের দাবি বিশিষ্টজনদের

‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন জেলার বিশিষ্টজনরা। প্রায় দুই বছর আগে আইন পাস হলেও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা।

সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন ফোরাম’-এর আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ দাবি জানান।

বৈঠকে ফোরামের আহ্বায়ক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. মোশাররফ হোসেন মাসুদ বলেন, “শরীয়তপুরের উর্বর মাটিতে ধান, পাট, পেঁয়াজ, আদা, টমেটোসহ বহু ফসল উৎপন্ন হয়, যার অনেক পণ্য রপ্তানিযোগ্য। কৃষিভিত্তিক এ জেলার উন্নয়নের জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অপরিহার্য।”

তিনি জানান, ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর শরীয়তপুরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পরে আইন প্রণয়ন সম্পন্ন হয়। ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ সংসদে পাস হয়। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ রাখা হয়। তবে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো অগ্রগতি নেই।

ড. মোশাররফ বলেন, “শরীয়তপুরে নেই কোনো সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে উন্নয়নবঞ্চিত মানুষের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে। এখনই প্রয়োজন মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং পদ্মার ভাঙন রোধ। দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় চালু করে এই সম্ভাবনাময় জনপদকে এগিয়ে নিতে সবার ঐক্য ও সহযোগিতা দরকার।”

ফোরামের সদস্যসচিব শিকদার মো. মেসবাহউদ্দিন বলেন, “পদ্মাপাড়ের নৈসর্গিক পলিমাটিতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। ২০২৩ সালে আইন পাসের পরও কোনো অগ্রগতি হয়নি। এই জটিলতা নিরসনে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।”

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. নুরুল ইসলাম বলেন, “কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের যা যা প্রয়োজন, শরীয়তপুরে সবই রয়েছে। তারপরও কেন এত দীর্ঘসূত্রতা? বিশ্ববিদ্যালয় হলে জেলার সামগ্রিক চেহারা বদলে যাবে। একযোগে সরকারের কাছে আমাদের দাবি পৌঁছে দিতে হবে।”

বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন মোটেক্স ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ কবির রানা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আহসানউল্লাহ, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি গ্লোবাল নেশনের সম্পাদক ড. মাহবুবুর রহমান, সিটি ইউনিভার্সিটির ডিন অধ্যাপক ড. জুলফিকার হাসান, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, পালং-জাজিরা ফোরামের সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, ধলপুর আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ বাচ্চু, অধ্যাপক এম. এ. শাহাবুদ্দিন, তরুণ ব্যবসায়ী সাইয়েদ জোবায়ের, ঢাকাস্থ শরীয়তপুর স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ারের সাবেক সভাপতি তাহমিদ জামান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘পদ্মা’র সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত বাস্তবায়ন হলে শরীয়তপুরের শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে, কৃষির উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন