শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

যশোরে দুদকের ১৮৭তম গণশুনানি অনুষ্ঠিত — দুর্নীতি কমানো সম্ভব: চেয়ারম্যান ড. মোমেন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১৮৭তম গণশুনানি আজ যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, সরকারি দপ্তরে সেবার মান উন্নয়ন, সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি রোধ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে এ গণশুনানির আয়োজন করে দুদক।

গণশুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন প্রধান অতিথি এবং কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

চেয়ারম্যান ড. মোমেন বলেন,

“বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করা সম্ভব নয় হয়তো, তবে চাইলে অবশ্যই কমানো সম্ভব। আমরা চাই সেবা দাতা ও সেবাগ্রহীতা একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হোক— এতে সেবার মান বাড়বে।”

তিনি বলেন, “দুদক জনগণকে কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করছে না, বরং সম্পৃক্ত করছে। আমরা যদি এমন কাজ করতে পারি যাতে বিদায় নেওয়ার সময় মানুষের চোখে কৃতজ্ঞতার অশ্রু ঝরে, তাহলে বুঝবো আমরা সত্যিই জনগণের পাশে ছিলাম।”

সেবাদানকারী কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন,

“রাষ্ট্রকে জবাব দেওয়ার পাশাপাশি নিজের বিবেকের কাছেও জবাবদিহি করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের ‘হুইসেল ব্লোয়ার’। “আমাদের অর্ধেকের বেশি মামলা এসেছে প্রেসম্যানদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সূত্রে,” যোগ করেন তিনি।

বিশেষ অতিথি কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন,

“জঙ্গলের আইন সভ্যতার আইন হতে পারে না। দুর্নীতি এমন এক দানব, যা সমাজের শৃঙ্খলা নষ্ট করে। তাই কেউ যেন নিজের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত না হয়— এটাই আমাদের লক্ষ্য।”

তিনি দুর্নীতিবিরোধী সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন,

“যেখানেই কাজ করি না কেন, নিজে দুর্নীতি করব না এবং অন্যের দুর্নীতিকে প্রশ্রয়ও দেব না।”

কমিশনার মূল্যবান উপহার গ্রহণে সতর্ক থাকতে কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন,

“আমরা ‘নো গিফট পলিসি’র দিকে এগোচ্ছি। এমন উপহার গ্রহণ করব না, যা আমাদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে।”

গণশুনানিতে যশোর জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা বঞ্চিত নাগরিকরা তাদের অভিযোগ উত্থাপন করেন। মোট ১০৪টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫টি দুদকের তফসিলভুক্ত ছিল, যার মধ্যে ১০টি অভিযোগ তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানে নেওয়া হয়, এবং বাকিগুলো প্রতিবেদন সাপেক্ষে নিষ্পত্তির জন্য গ্রহণ করা হয়।

গণশুনানিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাধারণ নাগরিক, স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্য এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুদক সপ্তাহব্যাপী প্রচারণা, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ, অভিযোগ বাক্স ও বুথ স্থাপন এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন