শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

নির্বাচন নিয়ে তলে তলে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: রিজভী

ঢাকা | ১৭ জুলাই ২০২৫

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আগামী নির্বাচন ঘিরে দেশে ভেতরে ভেতরে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কৃষক দলের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল।

রিজভী বলেন, “ভোটারদের পদধ্বনিতে মুখর হতে চাই ভোটকেন্দ্র। তাই আমরা বলেছি, যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিন, নির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করুন—অযথা বিলম্ব নয়। কিন্তু সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোট পেছানোর গুঞ্জন কেন? নিশ্চয় এর পেছনে গভীর কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “লন্ডনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যে যুক্ত বিবৃতি এসেছে, তা দেশের মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল। কিন্তু এরপরই সারা দেশে সংঘাত-সহিংসতা শুরু হয়। কেন এমন হলো—এই প্রশ্ন এখন জনগণের।”

রাজধানীর মিটফোর্ডে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে রিজভী বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের মাধ্যমে নিন্দা জানিয়েছি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছি।”

সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জ ও কক্সবাজারের গডফাদারদের পক্ষ নিয়ে সংসদে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ বিএনপির কেউ অন্যায় করলে সাংগঠনিকভাবে শাস্তি দেওয়া হয়, বহিষ্কার করা হয়, এমনকি আমরা নিজেরাই মামলা দিচ্ছি। এটা তারেক রহমানের নেতৃত্বের উদাহরণ। কিন্তু মিটফোর্ডের ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে—এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “ছয়-সাত বছর ধরে ভয়ংকর নিপীড়নের শিকার খালেদা জিয়াকে নিশ্বাসহীন অন্ধকার কক্ষে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলার মানে গোটা জাতির সহানুভূতির প্রতি অবজ্ঞা করা।”

তারেক রহমানকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “তারেক রহমান হচ্ছেন নিপীড়নের প্রতীক। তাকে হত্যা করতে চেয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, কোমর ভেঙে দেওয়া হয়। খুলনায় বিএনপির এক যুবককে গুলি করে পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে, কক্সবাজারে আব্দুর রহিমকে জামায়াত হত্যা করেছে—এগুলো নিয়ে তো কেউ কথা বলে না!”

রিজভী বলেন, “ঘটনা ঘটলেই সরকারকে দায়ী করা হয়—এমনটা নয়। কিন্তু দায়িত্ব তো সরকারেরই, প্রশাসনেরই। অথচ আপনারা মিছিল করছেন ১৭ বছর ধরে দেশের বাইরে থাকা একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে, যিনি নিজেও নিপীড়নের শিকার।”

সমাবেশে রিজভী দাবি করেন, “ছয়-সাত বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করেছেন তারেক রহমান। তিনি সাহস ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক।”

উল্লেখ্য, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও স্লোগানের প্রতিবাদে কৃষক দল এই কর্মসূচির আয়োজন করে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন