শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজনৈতিকভাবে যেন জরুরি অবস্থা ব্যবহার না হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত: এনসিপি

জরুরি অবস্থা যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১২তম দিনের আলোচনা শেষে এসব কথা বলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য জাবেদ রাসিম।

তিনি বলেন, “আমরা জরুরি অবস্থাকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছি—যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহামারি এবং অভ্যন্তরীণ গোলযোগ। তবে অভ্যন্তরীণ গোলযোগের পরিবর্তে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বা ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে যদি জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই ক্ষেত্রেই সরকার যেন এমন পদক্ষেপ নিতে পারে।”

রাসিম বলেন, “জরুরি অবস্থা জারির ক্ষেত্রে আগে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর অনুস্বাক্ষরে তা ঘোষণা করতেন। এখন সেটিকে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে এনসিপি একমত পোষণ করেছে। জরুরি অবস্থা যেহেতু তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের বিষয়, তাই এক্সিকিউটিভের হাতেই এর ক্ষমতা থাকা বাঞ্ছনীয়। তবে বিরোধী দলের প্রধান যেন বৈঠকে উপস্থিত থেকে মতামত দিতে পারেন, সেটি আমরা প্রস্তাব করেছি। জরুরি অবস্থা যেন কোনোভাবেই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।”

প্রধান বিরোধী দলের প্রধান যদি জরুরি অবস্থা ঘোষণার বৈঠক থেকে বের হয়ে বিরোধিতা করেন, সেই প্রভাব কী হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে জাবেদ রাসিম বলেন, “জরুরি অবস্থা ঘোষণার বৈঠক থেকে বের হয়ে বিরোধী দলীয় নেতা যদি এর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেন, তাহলে সেটির রাজনৈতিক প্রভাব পড়বে। তবে এটি প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকার দ্বার উন্মুক্ত রাখে।”

প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে জাবেদ রাসিম বলেন, “প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মে প্রবীণতম আপিল বিভাগের বিচারপতিকেই রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করবেন। তবে বৈঠকে কর্মে প্রবীণতম একজন নাকি দুইজন বিচারপতির মধ্যে থেকে নিয়োগ হবে, তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কর্মে প্রবীণতমকেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে কোনো রাজনৈতিক দল চাইলে সংবিধান সংশোধন করে জ্যেষ্ঠ দুইজনের মধ্যে একজনকে বাছাই করতে পারবে।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে জাবেদ রাসিম বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য এনসিপি একটি রূপরেখা দিয়েছে। আমরা চাই না বিচারাঙ্গনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অংশ হিসেবে দেখা হোক। বিচারাঙ্গনকে এই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা উচিত। বিচারাঙ্গনকে জড়িয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিকীকরণ করা হয়েছে। আমরা এর ঘোর বিরোধী।”


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন