সকালে পরীক্ষা, রাতে ফল প্রকাশ: তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি
- নিজস্ব সংবাদদাতা
- জুন ১৮, ২০২৫
একই দিনে সকালবেলা পরীক্ষা নিয়ে রাতেই ফল প্রকাশ—এমন অস্বাভাবিক দ্রুততায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় সমালোচনার মুখে পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়, যারা পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন শাখার যুগ্মসচিব বরাদ হোসেন চৌধুরীকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন বেসরকারি কলেজ শাখার উপসচিব আ. কুদ্দুস এবং সিনিয়র সহকারী সচিব জাবের মো. সোয়াইব।
জানা গেছে, গত ৯ মে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন অডিটর, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, উচ্চমান সহকারী ও অফিস সহায়ক—এই চারটি পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণ করেন মোট ৩ হাজার ১০৫ জন প্রার্থী। পরীক্ষাটি রাজধানীর তিনটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, ওই রাতেই, ১৫২ জনের ফলাফল প্রকাশ করে ডিআইএ কর্তৃপক্ষ, যা চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে বিস্ময় এবং ক্ষোভের জন্ম দেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, খাতা মূল্যায়ন এবং ফলাফল প্রকাশ—সবকিছুই ডিআইএ নিজেই সম্পন্ন করে, যা একটি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। অভিযোগ রয়েছে, পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিতে পরিকল্পিতভাবে এই দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া ডিপিসি (ডিপার্টমেন্টাল প্রমোশন কমিটি) গঠনের ক্ষেত্রেও নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে, যেখানে একজন শিক্ষা পরিদর্শককে কমিটির দায়িত্বে রাখা হয়—যা বিধি পরিপন্থী।
আরও অভিযোগ রয়েছে, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের বর্তমান পরিচালকের চাকরির মেয়াদ শেষের পথে হওয়ায় তিনি অতি দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাপ প্রয়োগ করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন দ্রুত ফল প্রকাশ নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। মন্ত্রণালয়ের তদন্তে এসব অনিয়ম উঠে এলে নিয়োগ বাতিলসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থার সুপারিশ আসতে পারে।