শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

কারাগারে সুজনের মৃত্যু নিয়ে পরিবারে সন্দেহ: গলায় ও থুতনিতে ক্ষতচিহ্ন

প্রান্তকাল ● ঢাকা, ১৫ জুন ২০২৫

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) মৃত্যুবরণ করা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে তার পরিবার। কারা কর্তৃপক্ষ ‘আত্মহত্যা’ বললেও পরিবারের দাবি—মরদেহে পাওয়া ক্ষতচিহ্নগুলো রহস্যজনক ও প্রশ্নবিদ্ধ।

রোববার (১৫ জুন) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এরপর স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

“মৃত্যুর কথা গোপন করে হাসপাতালে ডাকা হয়েছিল”—ভাইয়ের অভিযোগ

নিহতের বড় ভাই মেরাজ মাতবর বলেন,

“দুপুরে কারাগার থেকে ফোন করে জানানো হয় সুজন অসুস্থ। তবে মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রাখা হয়। বিকেলে হাসপাতালে এসে দেখি, সে মৃত।”

তিনি আরও বলেন, “সুজনের গলায় এবং থুতনিতে স্পষ্ট ক্ষত রয়েছে। আমরা সন্দেহ করছি, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং কিছু একটা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আমরা বিষয়টি তুলে ধরেছি।”

সুরতহাল প্রতিবেদনেও মিলল রহস্যের ইঙ্গিত

ঢাকা মেডিকেলে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল উদ্দিন মিয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন,

  • থুতনিতে ছিলা
  • ঘাড়ের ডান পাশে কালচে দাগ
  • ডান হাতের কনুইতে ছিল

এসআই কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন (মোবাইল: ০১৭৩৫-৭৯২৮০০)।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে ‘আত্মহত্যা’

কারাসূত্রে দাবি করা হয়, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক সুজন কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি সাধারণ কক্ষে নিজ ব্যবহৃত গামছা দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কারা হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসক বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে তার পরিবারের সন্দেহ—এই ঘটনা আত্মহত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত কিছু হতে পারে।

রাজনৈতিক পরিচয় ও মামলা

সুজন সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে ২০১৬-২০২১ মেয়াদে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি উত্তরা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে থাকা ১৫টি বিচারাধীন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

তার গ্রামের বাড়ি সাভারের বিরুলিয়া এলাকায়। তিনি দুই সন্তানের জনক। স্ত্রী রোকসানা বেগম গৃহিণী।

পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করা হয়েছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন