সোমবার, ২ জুন ২০২৫

ড. ইউনূসের পদত্যাগ গুঞ্জন ঘিরে বিতর্ক, ‘স্ট্যাটাসটি ব্যক্তিগত’ বললেন বিশেষ সহকারী

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে তার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের একটি ফেসবুক পোস্ট। শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে দেওয়া সেই স্ট্যাটাসে তিনি জানান, “প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না।” তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন এবং বিকেলে আরেকটি পোস্টে সেটিকে ‘ব্যক্তিগত মতামত’ বলে ব্যাখ্যা দেন।

এরই মধ্যে সেই প্রথম ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টে ফয়েজ আহমদ ড. ইউনূসের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে লেখেন, “অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনের জন্য তিনি অপরিহার্য।”

তিনি আরও বলেন, “সরকারকে আরও কার্যকর হতে হবে, উপদেষ্টাদের কাজ দৃশ্যমান করতে হবে এবং প্রফেসর ইউনূসকে সামনে রেখেই দেশের ভবিষ্যৎ রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. ইউনূসের যে সম্মান, তা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।”

ওই স্ট্যাটাসে ফয়েজ আহমদ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী রাজনীতিতে নাক গলাতে পারে না। আজকের দুনিয়ায় কোনো সভ্য দেশের সেনাবাহিনী রাজনীতি করে না। সেনাবাহিনীকে সম্মান দিতে হবে, কিন্তু হঠকারী কোনো পদক্ষেপও গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি আরও লেখেন, “আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের নামে ইনক্লুসিভনেসের অপচেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয়।” পাশাপাশি, আগামী এপ্রিল-মে’র মধ্যে নির্বাচন এবং “জুলাই সনদ” বাস্তবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব তার স্ট্যাটাসে আগস্টে “স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচারের প্রথম রায়” দেখার আশাও ব্যক্ত করেন, যা নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করে। তিনি লেখেন, “আমরা হারবো না, আমাদের হারানো যাবে না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ। প্রফেসর ইউনূস জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”

তবে বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে তিনি জানান, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যারের বিষয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসটি আমার ব্যক্তিগত মতামত। এটাকে নিউজ না করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।”

ড. ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন শুরু হয় বৃহস্পতিবার রাতে, যখন এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম তার সঙ্গে দেখা করেন। পরে বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, ড. ইউনূস “পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন।” এই খবরে দেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে।

গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় ড. ইউনূসের নেতৃত্বে।