শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আফতাবনগরে গ্যাস লিকেজ বিস্ফোরণে দগ্ধ শিশু তানজিলার মৃত্যু, আশঙ্কাজনক অবস্থায় একই পরিবারের আরও ৪ জন

ঢাকা, ১৮ মে ২০২৫

রাজধানীর আফতাবনগর দক্ষিণ আনন্দনগর এলাকায় গ্যাস লিকেজ থেকে সৃষ্ট আগুনে দগ্ধ হওয়া পরিবারের ৪ বছর বয়সী শিশু তানজিলা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।

রোববার বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) শিশুটির মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, “শিশুটির শরীরের ৬৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল এবং শ্বাসনালীও পুড়ে গিয়েছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।”

পরিবারজুড়ে মর্মান্তিক দুর্যোগ

গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনতলা ভবনের নিচতলায় থাকা এই পরিবারের পাঁচজন সদস্য গ্যাস লিকেজ বিস্ফোরণে দগ্ধ হন। দগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন শিশুটির বাবা তোফাজ্জল (৩২), মা মানসুরা (২৪), এবং আরও দুই বোন তানিশা (১১) ও মিথিলা (৮)।

চিকিৎসকদের বরাতে জানা গেছে, দগ্ধ চারজনের শরীরের ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা?

তানজিলার ভাইয়ের জামাই মো. রিপন জানান, তাদের বাসার পাশে একটি ভবনের নির্মাণ কাজ চলছিল। খননকাজের সময় গ্যাস লাইনের লিকেজ হয় এবং দিনভর গ্যাস বের হতে থাকে। সকালেই বাড়িওয়ালাকে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। রাতের বেলা মশার কয়েল জ্বালানোর সময় আগুন ধরে যায় এবং মুহূর্তেই বিস্ফোরণ ঘটে।

অসহায় জীবন, সীমাহীন ক্ষতি

তোফাজ্জল একজন দিনমজুর। চার মেয়ের জনক তিনি। বিস্ফোরণে তিন মেয়ে এবং স্ত্রীসহ তার পুরো পরিবার দগ্ধ হয়েছে। শুধু বড় মেয়ে তখন স্বামীর বাড়িতে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

স্থানীয় বাসিন্দা শরীফ বলেন, “আমরা বিকট শব্দে বিস্ফোরণ শুনে ছুটে যাই। আগুন ও ধোঁয়ার মধ্যে থেকে সবাইকে বের করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।”

আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ

স্থানীয়দের দাবি, গ্যাস লিকেজের বিষয়ে আগেই সতর্ক করা হলেও গৃহস্বত্বাধিকারী বা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি। এ ঘটনার জন্য গাফিলতিকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন