শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

কুমিল্লায় ছাত্রদলের বিক্ষোভে উত্তপ্ত বিএনপি কার্যালয়, আগুন-ভাঙচুরে আতঙ্ক

কুমিল্লা ১৭ মে ২০২৫

কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয় শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ ও সহিংসতার মুখে পড়ে। সদ্যঘোষিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে পদ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের ভেতরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে একদল ছাত্রদল কর্মী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। তারা “অবৈধ কমিটি বাতিল করো”, “ত্যাগীর প্রতি অবিচার চলবে না”—এমন নানা স্লোগান দিতে দিতে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ওঠে। মুহূর্তেই শুরু হয় ককটেল বিস্ফোরণ, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর এবং একপর্যায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় কেউ কেউ। আগুনে ভেতরের কিছু আসবাবপত্র পুড়ে গেলেও স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো গেছে।

ঘটনার সময় আশপাশের ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় দোকানপাট বন্ধ করে দেন। বেশ কিছু সময় পর্যন্ত পুরো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে।

ছাত্রদলের কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা জানান, “দীর্ঘদিন রাজপথে থাকার পরও আমাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। যারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার, হামলা-মামলায় ভুগেছেন, তাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা দলীয় আদর্শের পরিপন্থী।”

এদিকে ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত দুটি আংশিক কমিটিতে দক্ষিণ জেলায় সভাপতি করা হয়েছে কাজী জোবায়ের আলম জিলানীকে এবং সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক ধীমানকে। মহানগরে সভাপতি হয়েছেন নাদিহ রানা ও সাধারণ সম্পাদক ফায়াজ রশিদ প্রিমু। এই ঘোষণার পর থেকেই একাধিকবার বিক্ষোভ করেছে পদবঞ্চিতরা। এর মধ্যে কান্দিরপাড়ে সড়ক অবরোধ, মিছিল এবং রাতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে উত্তপ্ত অবস্থান ছিল উল্লেখযোগ্য।

সাবেক মহানগর ছাত্রদল সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু বলেন, “গত তিনদিন যাবত আন্দোলন চলছে। নতুন কমিটির কারণে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। তবে কারা আগুন দিয়েছে, আমি নিশ্চিত নই।”

মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, “এই কার্যালয়টি বেশ কিছুদিন পরিত্যক্ত ছিল, আমরা এটি পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। কারা ভিতরে আগুন দিয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।”

ঘটনার বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল হলেও আমরা তদন্ত শুরু করেছি। কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন