শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

নিবন্ধন ও ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি আজ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল ও প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরিয়ে পাওয়ার লক্ষ্যে করা আপিল ও আবেদন আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে মামলাটি দ্বিতীয় ক্রমিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে যে রাজনৈতিক বৈধতা ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে—এই শুনানি সেই পথে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

দলটির দাবি, ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনের শর্ত পূরণ করে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে হাইকোর্ট ২০১৩ সালে একটি রায়ে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে। জামায়াত বলছে, রায়ের আগেই তারা গঠনতন্ত্র সংশোধন করেছিল, কিন্তু তারপরও দলটিকে নির্বাচনী ব্যবস্থার বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়। তারা মনে করে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে দলটির সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হয়েছে।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত ২০১৩ সালেই আপিল করে। দীর্ঘদিন পর ২০২৩ সালে সেই আপিল খারিজ হয় শুধুমাত্র উপস্থিতির অভাবে। এরপর পুনরুজ্জীবনের আবেদন করে তারা পুনরায় শুনানির সুযোগ লাভ করে এবং আজ সেই শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জামায়াতের আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি তুলে ধরছেন যে, দলের নিবন্ধন ছিল আইনসম্মত এবং গঠনতন্ত্রের আপত্তিকর অংশ তারা সংশোধন করেছে। ফলে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়াই ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত হবে।

বিজ্ঞাপন

জামায়াতের অন্যতম প্রধান দাবি দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পাওয়া। দলটির মতে, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতীক ব্যবহার করেছে যা তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি ফুলকোর্ট সভার রেজল্যুশনের মাধ্যমে প্রতীকটি বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। জামায়াত বলছে, আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় এমন রেজল্যুশন পক্ষপাতদুষ্ট ও অপ্রাসঙ্গিক হতে পারে এবং এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা চেয়ে তারা পৃথক আবেদন করেছে। তারা আশা করছে, যদি নিবন্ধন ফিরে আসে, তবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকও তাদের ফেরত দেওয়া হবে।

২০২৪ সালের আগস্টে জামায়াতে ইসলামীর ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও পরবর্তীতে সরকার বাতিল করে। নতুন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে জামায়াত আবার সক্রিয় হয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের অবস্থান পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট। দলটির নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, এখন বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে রায় দিতে পারবে এবং তারা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছেন।

জামায়াত নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই রায় শুধু একটি রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না, বরং দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার ও রাজনৈতিক বৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেবে। তারা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছেন যে আদালত একটি ন্যায্য, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত দেবেন, যা দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও স্থিতিশীল করবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন