শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ঢাকা থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, পদত্যাগ সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন এবং ঢাকা থেকেই নির্বাচন করবেন—এটি প্রায় নিশ্চিত। তবে তিনি কবে নাগাদ উপদেষ্টা পরিষদের পদ থেকে পদত্যাগ করবেন, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার বিকেলে রাজধানীর গ্রিন রোডে ঢাকা-১০ আসনভুক্ত ধানমণ্ডি থানার নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে ভোটার হওয়ার আবেদন করেন আসিফ মাহমুদ। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এই উপদেষ্টা জানান—

“যেহেতু ঢাকা থেকেই নির্বাচন করব, তাই নিজের ভোটও ঢাকায় স্থানান্তর করছি। আগে ভোটার হয়েছি, কিন্তু কখনো ভোট দিতে পারিনি। এবার অন্তত নিজের ভোটটা দিতে পারব, সেটি নিশ্চিত করতে চাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন,

“নির্বাচনে কোথা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ঢাকাই হবে আমার নির্বাচনী এলাকা, ইনশাআল্লাহ।”

স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত

কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন কি না—এমন প্রশ্নে আসিফ মাহমুদ বলেন,

“এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার। ভবিষ্যতে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

বিএনপি এখনো ঢাকা-১০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করায় গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চান, এটি কি তাঁর জন্যই ফাঁকা রাখা হয়েছে বা তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা চলছে কি না। জবাবে তিনি বলেন,

“আমার কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। কোন দল কোন আসন ফাঁকা রাখল, সেটা আমার বিষয় নয়। আমি আমার সিদ্ধান্ত নিজেই নেব।”

পদত্যাগ প্রসঙ্গে উপদেষ্টার মন্তব্য

সরকারি পদ থেকে পদত্যাগের সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ মাহমুদ বলেন,

“নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আমি নির্বাচনে অংশ নেব। কবে নাগাদ পদত্যাগ করব, সেটা সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। আলোচনা শেষে দ্রুতই সে বিষয়ে জানাব।”

সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে মতামত

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদের বিষয়ে তিনি বলেন,

“সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনা করার সময় দিয়েছে। তাদের মতামত পাওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।”

তিনি আরও যোগ করেন,

“এই সরকারের তিনটি লক্ষ্য—সংস্কার, বিচার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তর—সবগুলোতেই অগ্রগতি হচ্ছে। বিচারের ক্ষেত্রে এ মাসেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশা করছি। সংস্কারের কার্যক্রমও প্রায় শেষের দিকে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এ বিষয়ে সরকার একাধিকবার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে। নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সবাইকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।”

রাজনৈতিক ইঙ্গিতবহ প্রশ্নে তিনি বলেন,

“আমি এখনো সরকারের অংশ। তাই আপাতত রাজনৈতিক মন্তব্য থেকে বিরত থাকছি। উপযুক্ত সময়ে সব বলব।”


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন