শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার সাথে তিন বাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তিন বাহিনীর প্রতি সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন। বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

‘নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর’ — প্রধান উপদেষ্টা

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অধ্যাপক ইউনূস বলেন,

“অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর—এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা চাদরের আওতায় থাকে, সেজন্য তিন বাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

তিন বাহিনীর প্রস্তুতি অবহিত

বৈঠকে অংশ নেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান।

তারা প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচনের জন্য নিজ নিজ বাহিনীর প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে ৯০ হাজার সেনা সদস্য, ২ হাজার ৫০০ নৌসদস্য এবং ১ হাজার ৫০০ বিমানবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।

প্রতিটি উপজেলায় এক কোম্পানি সেনা সদস্য দায়িত্ব পালন করবে, যাতে ভোটের দিন দেশের প্রতিটি অঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে।

তিন বাহিনীর প্রশংসা

প্রধান উপদেষ্টা বলেন,

“গত ১৫ মাসে সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীর সদস্যরা জাতীয় নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পরিশ্রম করেছে। দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তাদের পেশাদারিত্ব প্রশংসনীয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচনকালীন সময়ে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় তিন বাহিনীর ভূমিকা হবে ‘জাতীয় আস্থার প্রতীক’।

সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আমন্ত্রণ

বৈঠকের শেষে তিন বাহিনীর প্রধানেরা আসন্ন ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠান-এ প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাতির গর্ব সশস্ত্র বাহিনী সবসময় দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

এই বৈঠককে নির্বাচন-পূর্ব জাতীয় নিরাপত্তা সমন্বয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের এই প্রস্তুতি বার্তা দিয়েছে যে আসন্ন নির্বাচন হবে “শান্তিপূর্ণ ও সামরিকভাবে সুরক্ষিত”।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন