শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ নিরাপদ ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বাংলাদেশকে একটি উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মনোনীত পরবর্তী রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেট কমিটি অন ফরেন রিলেশনস-এর সামনে মনোনয়ন যাচাই শুনানিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন,

“কৌশলগত কারণেই বাংলাদেশ একটি উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমি আমার কূটনৈতিক জীবনের বিশ বছরের অভিজ্ঞতা এবং পূর্ববর্তী ঢাকা সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতির গুরুত্ব গভীরভাবে অনুধাবন করি।”

তিনি আরও বলেন,

“বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ বাংলাদেশ প্রায়শই তার প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, কারণ এটি বৃহৎ প্রতিবেশীদের ছায়ায় আচ্ছন্ন থাকে। অথচ বাংলাদেশ এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে— যেখানে জনগণ নতুন সরকার ও নতুন পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় দৃঢ়ভাবে পাশে আছে।”

ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার মনোনয়ন অনুমোদিত হলে তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে কাজ করবেন। তিনি বলেন,

“প্রায়ই নতুন এশিয়ান টাইগার হিসেবে অভিহিত বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক উন্নতির এক বাস্তব উদাহরণ। স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জনগণ তাদের পরিশ্রম ও স্থিতিস্থাপকতার মাধ্যমে সত্যিই প্রশংসনীয় উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।”

তিনি জানান, রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পেলে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়ানো, বাণিজ্য বাধা কমানো এবং দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে কাজ করবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সেপ্টেম্বরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে ঢাকায় নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যমতে, তার নাম সিনেটে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন দেওয়ার পর সিনেট শুনানির মাধ্যমে অনুমোদন দিলে নতুন রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের তথ্যমতে, ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন একজন জ্যেষ্ঠ ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তা, যিনি ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি এর আগে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মিশনে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন।

সিনেটে অনুমোদন পেলে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বাংলাদেশের পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, যা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচনা করবে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন