শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

সোনার দাম আকাশছোঁয়া: বিদেশ থেকে গয়না আনার নিয়মে নতুন ছাড়

ঢাকা | ২০ অক্টোবর ২০২৫

দেশে সোনার দাম এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। বর্তমানে বাজারে ২২ ক্যারেট সোনার ভরি প্রতি দাম ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা—যা মধ্যবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান দামের এই ধারা সাধারণ ক্রেতার গয়না কেনার আগ্রহও কমিয়ে দিয়েছে।

তবে বিদেশফেরত যাত্রীদের জন্য সরকার শুল্কমুক্ত সুবিধা রেখেছে, যাতে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ সোনার অলংকার দেশে আনতে পারেন কোনো কর ছাড়াই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, বিদেশ থেকে ফিরে একজন যাত্রী বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম সোনার গয়না (প্রায় ৮ ভরি ১০ আনা) আনতে পারবেন শুল্ক ছাড়াই। একইসঙ্গে রুপার গয়নার ক্ষেত্রে এই সীমা ২০০ গ্রাম পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এক ধরনের গয়না ১২ পিসের বেশি আনা যাবে না।

নতুন অপর্যটক যাত্রী ব্যাগেজ বিধিমালা ২০২৫ অনুযায়ী, যাত্রীরা চাইলে বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০ তোলা ওজনের একটি সোনার বার আনতে পারবেন, যার জন্য তোলাপ্রতি ৫ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হবে।

বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর যাত্রীদের ব্যাগেজ ঘোষণা ফরম পূরণ করতে হয়—যেখানে নাম, পাসপোর্ট নম্বর, আগমনের দেশ ও শুল্কযোগ্য পণ্যের বিবরণ দিতে হয়। তবে যদি সোনার পরিমাণ ১০০ গ্রামের নিচে হয়, তাহলে কোনো ফরম পূরণের প্রয়োজন নেই এবং গ্রিন চ্যানেল ব্যবহার করে সরাসরি বের হওয়া যাবে।

বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণ

বাংলাদেশে সোনার দাম নির্ধারণ হয় আন্তর্জাতিক বাজারের গতিবিধি ও ডলারের বিনিময় হারের ওপর। বৈধ পথে সোনার আমদানি প্রায় বন্ধ থাকায় এবং ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে আসা সোনাই এখন প্রধান জোগান উৎসে পরিণত হওয়ায় দেশে দাম তুলনামূলক বেশি।

এছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, বিশ্ববাজারে বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি এবং সরবরাহ ঘাটতি—সব মিলিয়ে দেশীয় বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে।

বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পূর্বাভাস

বিশ্বের প্রধান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বছর সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস জানিয়েছে, ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪ হাজার ৯০০ ডলার হতে পারে। অপরদিকে ব্যাংক অব আমেরিকা গ্লোবাল রিসার্চ বলছে, আগামী বছরই দাম ৫ হাজার ডলার ছুঁতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজারের এই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশেও দাম আরও বাড়বে। ফলে সাধারণ ক্রেতার জন্য সোনা ক্রমেই বিলাসবস্তু হয়ে উঠছে, যা এক সময় পরিবারের ঐতিহ্যের অংশ ছিল।

সংক্ষেপে:

বছরে একবার ১০০ গ্রাম সোনার গয়না আনতে পারবেন শুল্ক ছাড়াই

রুপার গয়না আনা যাবে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত

বছরে একবার ১০ তোলা সোনার বার আনতে পারবেন, শুল্ক তোলাপ্রতি ৫ হাজার টাকা

দেশে এখন ২২ ক্যারেট সোনার দাম ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা ভরি


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন