শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

নবপদোন্নতিপ্রাপ্ত আনসার কর্মকর্তাদের দায়িত্বে সততা ও দেশপ্রেমের আহ্বান মহাপরিচালকের

ঢাকা | ১৯ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার:

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আজ এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে ১০৪ জন উপজেলা প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষিকাকে সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ট পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। এ উপলক্ষে তাদের র‌্যাংক ব্যাজ পরিধান করানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নবপদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন,

“রাষ্ট্রীয় সেবায় নিয়োজিত প্রত্যেকের মনে রাখতে হবে— আমাদের পারিশ্রমিক আসে জনগণের ঘামার্জিত অর্থ থেকে। তাই দায়িত্ব পালনের প্রতিটি মুহূর্তে সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমকেই সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। মাতৃভূমিকে সমুন্নত রাখা— এই হোক আমাদের সবার অঙ্গীকার।”

দায়িত্ব, আত্মনিবেদন ও রাষ্ট্রীয় অবদানের বার্তা

মহাপরিচালক তাঁর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে রাষ্ট্রের প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়বদ্ধতা, মাঠ প্রশাসনে বাহিনীর কার্যকারিতা এবং দুর্যোগকালে আনসার সদস্যদের আত্মনিবেদন তুলে ধরেন। তিনি বলেন,

“বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর অবদান আজ জাতির কাছে অনন্য মর্যাদা অর্জন করেছে। আমাদের জানতে হবে— অতীতে আমরা কোথায় ছিলাম, বর্তমানে কোথায় আছি এবং ভবিষ্যতে কোন পথে এগোতে চাই। এই আত্মচেতনা ও দিকনির্ধারণই বাহিনীর অগ্রযাত্রার আলোকবর্তিকা হবে।”

মাঠপর্যায়ে দায়িত্বপালনের ওপর জোর

বাহিনীর প্রতিনিধিত্বমূলক ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে মহাপরিচালক বলেন,

“বাহিনীর কাঠামোকে আরও কার্যকর ও গতিশীল করতে হলে মাঠ পর্যায়ের প্রতিটি সদস্যকে নিজের যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটাতে হবে। তাহলেই আনসার বাহিনীর গ্রহণযোগ্যতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং দেশসেবার মহান দায়িত্ব হবে আরও ফলপ্রসূ।”

দুর্যোগে দ্রুত সাড়া দেওয়ার সক্ষমতা

দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের সময়ে আনসার বাহিনীর তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়ার প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,

“যেকোনো দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের মুহূর্তে প্রথম সাড়া দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। এজন্য প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ববোধে পরিপূর্ণ ও ইতিবাচক মনোভাবে উদ্ভাসিত থাকতে হবে।”

বিমানবন্দর অগ্নিকাণ্ডে আনসার সদস্যদের সাহসিকতার প্রশংসা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন,

“রাষ্ট্রীয় জানমাল রক্ষায় আনসার সদস্যদের সাহসিকতা সত্যিই অসামান্য। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের সংকটে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন।”

ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা ও জনগণের আস্থার বার্তা

নতুন বাংলাদেশের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাহিনীর ভূমিকা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন,

“রাষ্ট্রের স্বার্থে নিজেদের দক্ষতা ও সক্ষমতাকে আরও শাণিত করতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন ও তা ধরে রাখাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”

অনুষ্ঠানের শেষে তিনি বলেন,

“বাহিনীর প্রতি জনগণের যে আস্থা গড়ে উঠেছে, সেটি আমাদের সযত্নে রক্ষা করতে হবে। তাহলেই আনসার ও ভিডিপির প্রত্যাশা ও লক্ষ্য সফলভাবে পূরণ সম্ভব হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপমহাপরিচালক (প্রশাসন) কর্নেল মো. ফয়সাল আহাম্মদ ভূঁইয়া, উপমহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. সাইফুল্লাহ রাসেল, উপমহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. রফিকুল ইসলাম, উপমহাপরিচালক (ঢাকা রেঞ্জ) মো. আশরাফুল আলমসহ সদর দপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন