বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

পিবিআই’র অভিযানে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

রাজধানীতে বিশেষ অভিযানে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (পিবিআই)। এসময় নগদ ৭০ লাখ টাকা ও একটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক ও সরকারি কর্মকর্তাদের টার্গেট করে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল।

মামলার সূত্র

ডিএমপি’র পল্লবী থানায় দায়ের হওয়া মামলা (নং-৬৫, তারিখ ২৯ জুন ২০২৫) এর সূত্র ধরে এ অভিযান পরিচালনা করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। মামলাটি দায়ের করেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তিনি জানান, “ব্রাদার্স গ্রুপ” নামে একটি ভুয়া কোম্পানির চাকরির প্রলোভনে পড়ে তিনি প্রথমে ২২ লাখ টাকা প্রতারকদের হাতে হারান।

প্রতারণার কৌশল

তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, চক্রটি ভুয়া অফিস ভাড়া নিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিতো। চাকরির প্রলোভনে ডাকা ভিকটিমদের উচ্চ বেতন, গাড়ি, ভাতা ও ব্যবসায়িক পার্টনারশিপের প্রস্তাব দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতো। ভারতীয় ক্রেতা সেজে কোটি টাকার এডভান্স চেক দেখিয়ে বড় ব্যবসার আভাস দিতো। বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে কোরআন হাতে শপথ করিয়ে ভিকটিমদের পার্টনার বানানো হতো।

তারা দাবি করতো—বিদেশ থেকে আনা দামী ঘড়ি (রোলেক্স, রাডো, ওমেগা) বাংলাদেশ থেকে কম ভ্যাটে ভারতে রপ্তানি করে বিপুল মুনাফা করা হবে। এভাবে ভিকটিমদের কাছ থেকে একের পর এক অর্থ হাতিয়ে নিয়ে হঠাৎ করে অফিস গুটিয়ে গা-ঢাকা দিতো।

অভিযানের সাফল্য

পিবিআই প্রথমে ৩০ জুন আসামি মো. আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করে। পরে রিমান্ডে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতাসহ ৫ জনকে আটক করে। একই সময়ে আরেক ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ইলিয়াস খানের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে নেয়া নগদ ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

তদন্তে জানা যায়, গত ৩ মাসে চক্রটি ৫০টিরও বেশি মোবাইল ফোন ও শতাধিক সিম কার্ড ব্যবহার করেছে। প্রতারণার গোপনীয়তা রক্ষায় তারা বারবার ভাড়াবাসা বদল করতো। একজন নারী সদস্য নতুন বাসা ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতো এবং ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিয়ে প্রতারণার গোপনীয়তা নিশ্চিত করতো।

আইনি পদক্ষেপ

পিবিআই জানিয়েছে, ধৃত আসামিদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক মামলা রয়েছে। নতুন করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও দণ্ডবিধির প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

পিবিআই বলছে, চক্রটি সংঘবদ্ধ প্রতারণার মাধ্যমে একাধিক পরিবারকে সর্বস্বান্ত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আরও ভুক্তভোগীর তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন