বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

তারেক রহমান: ‘মানুষের মনুষ্যত্ব অর্জন আর পশুত্ব বর্জনই হোক আমাদের অঙ্গীকার’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে একজন মানুষ নাগরিক হিসেবে গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার হারানোর কারণে সমাজে অসহিষ্ণুতা বেড়েছে। এই অসহিষ্ণুতা কাটিয়ে একজন মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার জন্য মনুষ্যত্ব অর্জন এবং পশুত্ব বর্জনই আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলানগরে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত “প্রাণী ও প্রাণের মিলন মেলা” অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

গণতন্ত্র ও বাস্তুতন্ত্রের সম্পর্ক

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্র যেমন মানুষের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত, তেমনি বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত পশুপাখি ও বন্যপ্রাণীর অধিকার। তাই রাষ্ট্র ও সমাজে গণতন্ত্র এবং শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠিত থাকলে বাস্তুতন্ত্রও নিরাপদ থাকবে। মানুষের অধিকার নিশ্চিত হলে প্রাণীর অধিকার সংরক্ষণেও সবাই সচেতন হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “এই যাত্রায় আমাদের স্লোগান হোক—‘প্রাণ বাঁচাও, প্রাণী বাঁচাও’। দেশ হোক সব প্রাণের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।”

বিলুপ্তির পথে প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের হুমকি

তারেক রহমান জানান, বাংলাদেশে এক হাজার ৬০০টির বেশি প্রাণী প্রজাতি থাকলেও প্রায় ৩৯০টির অস্তিত্ব বিলুপ্তির মুখে। সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার ১৯৮০-এর দশকে প্রায় ৫০০ ছিল, যা বর্তমানে কমে ১০০টির কাছাকাছি এসেছে। হাতির সংখ্যা নেমে এসেছে ২০০টির নিচে।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বন্যপ্রাণী পাচার ও আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে। জনগণের রায়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে প্রাণী সংরক্ষণ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

মানুষের নিরাপত্তা ও প্রাণীর প্রতি সহমর্মিতা

তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্র অনেক সময় মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলেও প্রাণীর নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা প্রাসঙ্গিক। কারণ প্রাণীর আবাস অক্ষুণ্ণ রাখা এবং প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখা মানব সমাজের উন্নত নৈতিকতা ও পরিপক্বতার প্রতিফলন।

“শুধু আইন করে প্রাণীর আহার-নিবাস নিশ্চিত করা কঠিন। মানুষের মনে প্রাণীর প্রতি অনুভূতি ও সহানুভূতি তৈরি করতে না পারলে আইন কার্যকর হবে না,” যোগ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিতি

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান, ক্রিকেটার শফিউল আলম, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আকতার, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, বাংলাদেশ এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও অভিনেতা আদনান আজাদ, প্রধান উদ্যোক্তা আতিকুর রহমান রুমনসহ অনেকে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন