৫৭ সরকারি কলেজের নাম পরিবর্তন: বাদ পড়লো শেখ পরিবার ও আওয়ামী নেতাদের নাম
- নিজস্ব সংবাদদাতা
- জুন ২৪, ২০২৫
দেশের ৫৭টি সরকারি কলেজের নাম থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ শেখ পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নাম বাদ দিয়ে সংক্ষিপ্ত ও স্থানভিত্তিক নতুন নামকরণ করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসনিক সরলতা, বাস্তবিক পরিচিতি এবং স্থানীয় জনগণের ব্যবহৃত প্রচলিত নামে ফিরতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২৩ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২৮ মে ২০২৫ তারিখের প্রজ্ঞাপন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালের চিঠির আলোকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসমূহের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোকে তা দ্রুত বাস্তবায়নের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, “প্রশাসনিক কার্যক্রম ও শিক্ষাগত নথিপত্রে সংশোধিত নামসমূহ ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) দপ্তরকে ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ এবং সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোর ই-মেইলে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
পরিবর্তিত কিছু কলেজের নাম:
- সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজ, ভোলা → ভোলা সরকারি মহিলা কলেজ
- সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, পল্লবী, ঢাকা → পল্লবী সরকারি কলেজ
- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয়, কালিয়াকৈর, গাজীপুর → কালিয়াকৈর সরকারি কলেজ
- সরকারি শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজ, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ → কোটালীপাড়া সরকারি আদর্শ কলেজ
- সরকারি শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজ, ডাসার, মাদারীপুর → ডাসার সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়
- সরকারি মুজিব কলেজ, সখিপুর, টাঙ্গাইল → সখিপুর সরকারি কলেজ
- সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, রূপসা, খুলনা → রূপসা সরকারি কলেজ
- সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ, মিরপুর, ঢাকা → মিরপুর সরকারি মহিলা কলেজ
- সরকারি শেখ রাসেল ডিগ্রি কলেজ, রাজৈর, মাদারীপুর → লুন্দি সরকারি ডিগ্রি কলেজ
- সরকারি বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয়, ফুলবাড়িয়া → ফুলবাড়িয়া সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, কলেজগুলোর দীর্ঘ ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত নামের কারণে মাঠপর্যায়ে নানা ধরনের প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হচ্ছিল। শিক্ষার্থী ভর্তি, ফলাফল প্রকাশ, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান প্রক্রিয়ায় বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছিল। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও উঠছিল, বিশেষ করে নির্বাচনী সময়ে।
স্থানীয় জনগণের ব্যবহার করা প্রচলিত নাম এবং সংক্ষিপ্ত পরিচয় ফিরিয়ে আনলে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশাসনিক ও শিক্ষাগত কার্যক্রমে অধিক কার্যকর হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
এই সিদ্ধান্তে কলেজ শিক্ষক ও স্থানীয় প্রশাসনের অনেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানালেও একটি অংশের মতে, এ ধরনের নাম পরিবর্তন রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবেলার একটি প্রশাসনিক পদক্ষেপ হলেও, জাতীয় নেতাদের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সিদ্ধান্তটি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বরং প্রশাসনিক বাস্তবতা ও শিক্ষার পরিবেশকে আরও স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ রাখতে নেওয়া হয়েছে।
নাম পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দেশের সরকারি কলেজগুলোতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, পরিচিতি ও ব্যয়সংকোচনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামকরণে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখার তাগিদও উঠে এসেছে শিক্ষা মহলে।
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর
1.
৪৫তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৮ জুলাই
- ৪৭ মিনিট আগে
3.
তিনটি অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালাল দুদক
- ২ ঘণ্টা আগে
5.
ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা জামায়াতের
- ২ ঘণ্টা আগে