শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সীমিত সেবায় চলছে চিকিৎসা, ভোগান্তিতে রোগীরা

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অচলাবস্থায় থাকা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সীমিত পরিসরে চিকিৎসা সেবা চালু রয়েছে। তবে বহির্বিভাগসহ অন্যান্য সেবা এখনো বন্ধ থাকায় সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি বেড়েছে। বুধবার সকাল দশটায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কেবলমাত্র জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় রোগীদেরই ভর্তি ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ বর্তমানে ২৯ জন রোগী জরুরি বিভাগের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জরুরি সেবার আওতায় না পড়া রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। যেমন মাদারীপুর থেকে আসা মো. ইয়াকুব আলী নামের এক রোগী বলেন, “চোখের যন্ত্রণা সহ্য হচ্ছে না। এত দূর থেকে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাওয়া কষ্টকর। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই।” মঙ্গলবার জরুরি বিভাগে ৮৬ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং ৯টি অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

গত ২৮ মে হাসপাতালের ভেতরে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে সাধারণ রোগী, চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সংঘর্ষের পর থেকেই সব ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ঈদের ছুটির আগে হাসপাতালটি প্রায় পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। বর্তমানে কিছু সাধারণ রোগী এবং কয়েকজন জুলাই আহত ব্যক্তি হাসপাতালে রয়ে গেছেন, তবে হাসপাতালের চতুর্থ তলার বিশেষায়িত ইউনিটে তাঁদের অবস্থান রহস্যময় হয়ে পড়েছে। আজ সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিটের দরজায় তালা ঝুলছে এবং ভেতরে প্রবেশ সম্ভব হয়নি। নার্সরা জানান, আহত ব্যক্তিরা নিজেরাই ইউনিটে তালা লাগিয়ে রেখেছেন এবং দিনে একবার খাবার নিতে একজন বাইরে আসেন।

হাসপাতালের পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় জরুরি বিভাগের রোগীরাও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। আনসার সদস্যরা জানিয়েছেন, কেবল জরুরি রোগীদেরই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অনেক রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে বহির্বিভাগ চালু করার চেষ্টা চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে শনিবার থেকে পুরোপুরি চিকিৎসাসেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে, সরকারের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি জুলাই আহতদের ছাড়পত্র দেওয়ার নির্দেশ দিলেও বেশির ভাগ আহত ব্যক্তি এখনও হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তাঁরা ইউনিট থেকে বের হচ্ছেন না এবং চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগও সীমিত। প্রশাসনিক উদ্বেগ থাকলেও পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে রোগীসেবার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ক্ষুণ্ন হতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন