শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ট্রাম্পের অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, কারফিউ জারি

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমাতে না পেরে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১০ জুন) স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে বুধবার (১১ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত এ কারফিউ কার্যকর থাকবে বলে ঘোষণা দেন শহরের মেয়র। বিক্ষোভ সহিংসতা চরমে পৌঁছালে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “আমরা চরম এক পর্যায়ে পৌঁছেছি। এখন পর্যন্ত শহরের অন্তত ২৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাটের শিকার হয়েছে।” এ অবস্থায় শহরের যে এলাকাগুলোতে বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে, সেই অঞ্চল—প্রায় ১ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে কারফিউ বলবৎ থাকবে। লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের মোট আয়তন প্রায় ৫০০ বর্গমাইল হলেও এই কারফিউ আপাতত সীমিত পরিসরে কার্যকর থাকবে।

কারফিউ চলাকালীন সময়েও জরুরি পরিষেবা, সংবাদমাধ্যম, বাসিন্দা ও গৃহহীনদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কার্যকর হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ প্রধান জিম ম্যাকডোনেল। তিনি বলেন, “শনিবার থেকে শহরে বেআইনি ও বিপজ্জনক আচরণ বেড়ে গেছে। জীবন এবং সম্পত্তির নিরাপত্তার স্বার্থে কারফিউ একটি অনিবার্য পদক্ষেপ।”

জিম ম্যাকডোনেল আরও জানিয়েছেন, গত চার দিনে বিক্ষোভ চলাকালীন সময় পুলিশের হাতে অন্তত ৩৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে এটি ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে টেক্সাস, বোস্টন, হিউস্টন, ফিলাডেলফিয়া ও আরও কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কারণে বিশেষ করে লাতিন আমেরিকান ও আফ্রিকান অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরপাকড় এবং জাতীয় গার্ড মোতায়েন পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার (৮ জুন) লস অ্যাঞ্জেলেসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসম একে ‘অবৈধ’ পদক্ষেপ বলে আখ্যা দেন এবং তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অভিযোগ করেন, এই পদক্ষেপ স্থানীয় সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই নেওয়া হয়েছে এবং তা সংবিধান পরিপন্থী।

বিশ্লেষণ বলছে, অভিবাসন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজন ও সামাজিক অস্থিরতা বেড়ে চলেছে। আসন্ন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অভিবাসনই হতে পারে অন্যতম প্রধান বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।


তথ্যসূত্র: বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, এপি, লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন