শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ব্যর্থতার দুই সপ্তাহ পর ফের যুদ্ধজাহাজ উন্মোচন, কিম জং উনের কঠোর প্রতিক্রিয়া ও শাস্তির মুখে কর্মকর্তারা

৬ জুন ২০২৫

প্রথম প্রচেষ্টায় লজ্জাজনক ব্যর্থতার মাত্র দুই সপ্তাহ পর ফের একবার ৫,০০০ টন ওজনের যুদ্ধজাহাজ উন্মোচন করেছে উত্তর কোরিয়া। এ ঘটনাটি শুরু থেকেই রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উনের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার যুদ্ধজাহাজটি পুনরায় পানিতে নামানো হয়েছে এবং বর্তমানে এটি একটি জেটিতে নোঙর করা আছে। চলতি মাসেই দেশটির শাসক দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সভার আগেই জাহাজটি পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রথমবারের মতো জাহাজটি জলে ভাসানোর সময় কিম জং উন নিজেই উপস্থিত ছিলেন এবং ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন। জাহাজটি সেসময় ভারসাম্য হারিয়ে কাত হয়ে পড়ে। তিনি এ ঘটনাকে “অপরাধমূলক কাজ” আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি দেশের “গৌরব ও মর্যাদায় মারাত্মক আঘাত” করেছে।

তিনি আরও বলেন, এই ব্যর্থতা “চরম অবহেলা, দায়িত্বহীনতা এবং অজ্ঞান বিজ্ঞানের ফল।”

ঘটনার পর অন্তত চারজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন রি হিয়ং-সন—যিনি শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির গোলাবারুদ শিল্প বিভাগের উপপরিচালক এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের সদস্য। এই কমিশন উত্তর কোরিয়ার সামরিক নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের কী শাস্তি হতে পারে তা স্পষ্ট নয়, তবে অতীতে উত্তর কোরিয়ায় জবাবদিহির নামে শ্রম শিবিরে পাঠানো থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮ নর্থ পর্যবেক্ষণ গ্রুপের গবেষকদের মতে, জাহাজটি পুনরায় স্থির করার প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি হাতে-কলমে পরিচালিত হয়। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, কর্মীরা দড়ি টেনে ও বড় ব্যারেজ বেলুন ব্যবহার করে জাহাজটিকে ভারসাম্যে ফেরায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যর্থতার পর কিম জং উনের দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া উত্তর কোরিয়ার সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রবল আগ্রহেরই প্রমাণ।

কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স অ্যানালাইসিসের গবেষক জিহুন ইউ বলেন, “তাদের শাসনব্যবস্থা একটি ‘উত্থানশীল সামরিক শক্তি’র ভাবমূর্তি গড়তে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই এ ব্যর্থতা বরং তাদের অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করে তুলবে।”

ওয়াশিংটনের স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়া বিশ্লেষক মাইকেল ম্যাডেন বলেন, “এই প্রকল্পে কিম প্রশাসন যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে, তারই প্রতিফলন এই প্রতিক্রিয়া।”

কয়েক সপ্তাহ আগেই দেশটির অন্য প্রান্তে একই ধরণের একটি যুদ্ধজাহাজ প্রদর্শন করে কিম এটিকে “নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের মাইলফলক” বলে আখ্যায়িত করেছিলেন এবং জানান, এটি আগামী বছর সক্রিয়ভাবে মোতায়েন করা হবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন