শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

গণভোট সম্ভব না যারা বলছেন, তারা গণ-অভ্যুত্থানকে অবমূল্যায়ন করছেন: শিশির মনির

বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেছেন, গণভোট সংবিধানবিরোধী—এমন দাবি করে কেউ কেউ মূলত গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ও তার সাংবিধানিক শক্তিকে আন্ডারমাইন করছেন। তাঁর মতে, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান দেশের রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠনের কেন্দ্রবিন্দু, তাই বর্তমান সরকারের বৈধতা ও সাংবিধানিক ব্যাখ্যা সেই প্রেক্ষিতেই দেখতে হবে।

নয়া দিগন্তকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,

“যারা বলছেন সংবিধানে গণভোটের সুযোগ নেই, তারা ট্র্যাডিশনাল ব্যাখ্যার ফাঁদে আটকে আছেন। এই রাষ্ট্র এখন গণ-অভ্যুত্থানের বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আছে—এটা না বুঝলে সব ব্যাখ্যাই ভুল হবে। ৫ আগস্টের ঘটনাকে সরিয়ে দিলে সংবিধান, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বা নির্বাচনী ব্যবস্থার কোনো ভিত্তিই থাকবে না।”

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের আইনগত কাঠামো এখন শুধুমাত্র অনুচ্ছেদ ১০৬-এর উপর নির্ভর নয়, বরং জনগণের সম্মিলিত ক্ষমতা ও গণঅভ্যুত্থানের ফলেই বর্তমান সরকারের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

“চিফ অ্যাডভাইজারের শপথ কোথায় লেখা আছে? কোনো আইনে নেই। কিন্তু জনগণের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যখন সরকার গঠিত হয়েছে, তখন সেটাই সংবিধানের প্রকৃত শক্তি হিসেবে গণ্য হবে,”—বলেন শিশির মনির।

শিশির মনিরের মতে, যারা সংবিধানের প্রথাগত ধারা মেনে ব্যাখ্যা দিতে চান, তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটকে অগ্রাহ্য করছেন।

“আইন শুধু লিখিত অক্ষরের বিষয় নয়, এটি বাস্তবতার প্রতিফলন। গণঅভ্যুত্থান একটি ঐতিহাসিক বাস্তবতা—এটিকে বাদ দিলে রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানই টিকবে না,”—তিনি যোগ করেন।

বর্তমানে সরকারের সাংবিধানিক ভিত্তি নিয়ে যে মামলা হাইকোর্টে চলছে, সে প্রসঙ্গেও শিশির মনির বলেন, “হাইকোর্ট ইতোমধ্যে রায়ে উল্লেখ করেছে যে সরকারের ভিত্তি কেবল ১০৬ নয়, বরং জনগণের কনস্টিটিউশনাল পাওয়ার। বিষয়টি এখন আপিল শুনানির অপেক্ষায়, এবং সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চে এর শুনানি হবে।”

সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ:

অ্যাডভোকেট শিশির মনিরের বক্তব্যে পরিষ্কার, তিনি গণভোট ও সংবিধান সংস্কারের প্রশ্নে বর্তমান সরকারের সাংবিধানিক ভিত্তিকে গণ-অভ্যুত্থান ও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার ফলাফল হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। তাঁর মতে, সংবিধানকে প্রথাগত দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা নয়, বরং চলমান গণআন্দোলন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে মূল্যায়ন করাই সময়ের দাবি।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন