শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন, আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা

টানা আন্দোলনের মুখে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে শিক্ষকরা এই সিদ্ধান্তকে “অপর্যাপ্ত” বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ও অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

রবিবার সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগ থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বর্তমান মূল বেতনের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ বা সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা প্রদান করা হবে। প্রজ্ঞাপনটি স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব মরিয়ম মিতু।

শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া ও আন্দোলনের ঘোষণা

প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, এটি তাদের দাবি পূরণের সামান্য অংশ এবং ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১,৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীতকরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন,

“৫ শতাংশ বাড়িভাড়ার প্রজ্ঞাপন আমাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”

তিনি নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে লিখেছেন, “আমাদের দাবি ন্যায্য, সরকার আংশিকভাবে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু শিক্ষক সমাজ কোনো দয়া নয়, অধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই থাকবে।”

আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগামীকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকে তারা কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করবেন। এর আগে শনিবার থেকে তারা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আমরণ অনশনে বসেছেন।

প্রজ্ঞাপন জারির পরও শিক্ষকদের অবস্থান থেকে সরে না আসার বিষয়টি স্পষ্ট করে আন্দোলনকারীরা বলেন, “এই আন্দোলন শুধু বাড়িভাড়ার নয়, এটি মর্যাদার প্রশ্ন। আমরা দেশের শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে চাই।”

সরকারের পক্ষের বক্তব্য

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকারের আর্থিক সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করেই ধাপে ধাপে বাড়িভাড়া ও অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “শিক্ষকদের দাবি যথার্থ, তবে একসঙ্গে সব পূরণ করা সম্ভব নয়। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ভাতাও পর্যালোচনায় থাকবে।”

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান বজায় রেখে ঘোষণা দিয়েছেন, “আমরা শিক্ষাবান্ধব প্রজ্ঞাপন চাই, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়।”


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন