বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

লোকসংগীতের বরেণ্যশিল্পী ফরিদা পারভীনের ইন্তেকাল

বাংলাদেশের লোকসংগীত ও লালনগীতির কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন। ফরিদা পারভীন স্বামী ও চার সন্তান রেখে গেছেন।

অসুস্থতা ও চিকিৎসা

দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন ফরিদা পারভীন। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থার অবনতি ঘটে। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। গত বুধবার পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে গেলে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। অবশেষে শনিবার রাতে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে না–ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।

শিল্পীজীবনের সূচনা

১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে, ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত শিল্পী হিসেবে তাঁর সংগীতজীবন শুরু হয়। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে সাড়া ফেলেন তিনি। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে লালনগীতির তালিম নেন এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি।

অবদান ও স্বীকৃতি

পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে গান গেয়ে লাখো শ্রোতার হৃদয়ে জায়গা করে নেন ফরিদা পারভীন। লালনগীতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘অচিন পাখি স্কুল’, যেখানে তরুণদের লালনের গান শেখানো হয়।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি লাভ করেন একুশে পদক।

বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হলো তাঁর প্রস্থানে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন