বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

নেতানিয়াহু: কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না, পশ্চিম তীর ‘আমাদের জায়গা’

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন, “কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না, এই জায়গা আমাদের।” বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) অধিকৃত পশ্চিম তীরে একটি বৃহৎ বসতি স্থাপন প্রকল্পের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। পরদিন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বিষয়টি প্রকাশ করে।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু পশ্চিম তীরে নতুন বসতি স্থাপন প্রকল্পকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভবিষ্যতে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠবে।

বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা

১২ বর্গকিলোমিটার জমির ওপর গড়ে উঠতে যাওয়া বসতিটি ই-ওয়ান (E-1) নামে পরিচিত। এখানে প্রায় ৩ হাজার ৪০০ নতুন বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে পশ্চিম তীরের একটি বড় অংশ পূর্ব জেরুজালেম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং ইসরায়েলি বসতিগুলোর মধ্যে সংযোগ আরও শক্তিশালী হবে।

নেতানিয়াহু অনুষ্ঠানে বলেন—

“আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করছি, কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না। আমরা আমাদের ঐতিহ্য, জমি ও নিরাপত্তা রক্ষা করব। এই শহরের জনসংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে।”

ফিলিস্তিনিদের প্রতিক্রিয়া

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ বলেন, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রই শান্তির চাবিকাঠি। তিনি ইসরায়েলের বসতিগুলোকে আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন, নেতানিয়াহু সমগ্র অঞ্চলকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

রুদেইনাহ আরও বলেন, ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের ১৪৯টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বাকি দেশগুলোকে অবিলম্বে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক আইনের অবস্থান

আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ১৯৬৭ সালের পর থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সব বসতি অবৈধ বলে বিবেচিত। যদিও ইসরায়েল সেগুলোকে জাতীয় নিরাপত্তা ও ঐতিহাসিক অধিকারের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে।

প্রেক্ষাপট

নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে আসছেন। ১৯৯০-এর দশকের অসলো চুক্তির বিরুদ্ধেও তিনি সরব ছিলেন। এর আগে ১৯৯৭ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি পূর্ব জেরুজালেমে হার হোমা নামের বসতি গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বলেন, তার ক্ষমতায় থাকাকালে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে না।

সম্প্রতি ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচও বলেছেন, ই-ওয়ান প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিন কার্যত মানচিত্র থেকে মুছে যাবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন