শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার আতঙ্কের মধ্যেই পালিত হলো বিশ্ব মশা দিবস

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপে যখন বাংলাদেশের মানুষ আতঙ্কিত, ঠিক সেই সময় গতকাল (২০ আগস্ট) অনাড়ম্বরভাবে পালিত হলো বিশ্ব মশা দিবস। প্রতি বছর এ দিনে মশা ও মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে দিবসটি পালিত হয়।

ইতিহাস ও গুরুত্ব

১৮৯৭ সালের ২০ আগস্ট ব্রিটিশ চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী স্যার রোনাল্ড রস আবিষ্কার করেন যে ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্লাজমোডিয়াম মশার মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এ আবিষ্কার আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে এবং মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯০২ সালে তাঁর এই অবদানের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।

মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর কোটি কোটি মানুষ ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাস, ইয়েলো ফিভার, জাপানিজ এনসেফালাইটিস এবং ফাইলেরিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুই হাজারো মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব রোগের বিস্তার আরও বাড়ছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও মশার বিস্তার

তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতা মশার প্রজননের আদর্শ পরিবেশ তৈরি করছে। বিশেষ করে ডেঙ্গুর বাহক এডিস এজিপ্টি মশা এখন শুধু বর্ষায় নয়, বছরজুড়েই বংশবৃদ্ধি করছে। পাশাপাশি আর্দ্রতা ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন অঞ্চলেও এসব রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি

বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থান, উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়া ও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বছরজুড়েই দেখা দিচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে জলাবদ্ধতা, অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে মশার প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

করণীয় ও সমাধান

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু কীটনাশক ছিটিয়ে মশা দমন সম্ভব নয়। সমন্বিত ভেক্টর ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নগর পরিকল্পনায় জলবায়ু অভিযোজন এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি স্কুল-কলেজে সচেতনতামূলক কর্মসূচি ও কমিউনিটি উদ্যোগও নিতে হবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন