রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

“সৈরাচার রুখতেই সংলাপে অংশ নিচ্ছি, তবে নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব খর্ব করা চলবে না” — সালাহউদ্দীন আহমেদ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপে সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, দেশে যাতে আর কখনো স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে, সেই লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগে বিএনপি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে। তবে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য রক্ষায় নির্বাহী বিভাগের যথাযথ কর্তৃত্ব বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংলাপের ২০তম দিনে একপর্যায়ে বিএনপির প্রতিনিধি দল ওয়াকআউট করলেও পরে আলোচনায় ফিরে এসে সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকেই প্রস্তাব ছিল, কেউ যেন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারেন—সেটি গৃহীত হয়েছে। আমরা আরও প্রস্তাব দিয়েছি নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি হোক, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি থাকবেন। সেটিও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।”

তিনি জানান, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরবর্তী পর্যায়ে যদি সংসদ কোনো সংশোধনী আনে, তা যেন গণভোটে না নেওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির অনুমোদন না পায়—এই দাবিও আমাদের পক্ষ থেকেই এসেছে এবং তা গ্রহণ করা হয়েছে।”

তবে এসব অগ্রগতির মাঝেও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হলে রাষ্ট্রচালনায় ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে বলে সতর্ক করেন তিনি। “দায়িত্ব ও জবাবদিহিতার পাশাপাশি কর্তৃত্বও থাকতে হবে, নইলে কার্যকর প্রশাসন গঠন সম্ভব নয়,”—বলেন সালাহউদ্দীন।

তিনি আরও বলেন, “সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত-পা বেঁধে দিলে রাষ্ট্র পরিচালনায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। আমরা দুর্বল নয়, শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক নির্বাহী বিভাগ চাই।”

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, তারা সংলাপে অংশ নিচ্ছেন গঠনমূলক অবস্থান থেকে, তবে যেখানে মৌলিক মতভেদ রয়েছে, সেখানে ভিন্নমত জানানোও গণতান্ত্রিক অধিকার।

“সব বিষয়ে ঐক্যমত হবে—এমন ভাবা ভুল। ভিন্নমত থাকবেই, সেই ভিন্নমত নিয়েই তো গণতন্ত্রের যাত্রা এগিয়ে চলে। ঐকমত্য মানেই কারও ওপর মত চাপিয়ে দেওয়া নয়”—বলেই সংলাপের পরবর্তী ধাপে বিএনপির সক্রিয় অংশগ্রহণের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন সালাহউদ্দীন আহমেদ।

তিনি বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ, তাতে বিএনপি অংশ না নিলে তার স্বার্থকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।”


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন