রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

“তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নির্ধারণে ভোট নয়, চাই সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত”—জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবদুল্লাহ্ তাহের

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটাভুটি নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্তকেই একমাত্র গ্রহণযোগ্য পথ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপের দ্বিতীয় ধাপ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তাহের বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নির্বাচনে ৫ বা ৭ সদস্যের কমিটির দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমরা কোনো প্রস্তাবেরই বিরোধিতা করছি না। তবে আমাদের জোরালো অবস্থান—কমিটির সদস্য মনোনয়ন সর্বসম্মতভাবে হতে হবে। ভোটের মাধ্যমে নয়।”

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “র‍্যাঙ্কড চয়েস ভোটিং বা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিলে তা ভবিষ্যতে নেতিবাচক রাজনীতির দরজা খুলে দেবে। এতে ‘হর্স ট্রেডিং’ ও অনৈতিক দরকষাকষির আশঙ্কা থেকেই যায়। আমরা অতীতে তার ফল ভোগ করেছি।”

বিকল্প প্রস্তাব তুলে ধরে তাহের বলেন, “যদি রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব না হয়, তাহলে সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।”

কমিটি কাঠামোর প্রস্তাব হিসেবে তাহের জানান,

  • ৫ সদস্যের কমিটি হলে সরকার ও বিরোধী দল থেকে দু’জন করে এবং তৃতীয় বৃহত্তম দল থেকে একজন;
  • ৭ সদস্যের কমিটির ক্ষেত্রে সরকার ও বিরোধী দল থেকে তিনজন করে এবং তৃতীয় বৃহত্তম দল থেকে একজন রাখা যেতে পারে।
    তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যে কোনো কমিটি হোক, তার সদস্যদের নির্ধারণ সর্বসম্মতিক্রমেই হতে হবে। কাউকে বাদ দিয়ে সংখ্যার জোরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ চলবে না।”

ক্ষমতার ভারসাম্য প্রসঙ্গে জামায়াতের এই নেতা বলেন, “একই ব্যক্তি যদি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং দলের প্রধান হন, তাহলে রাজনৈতিক ভারসাম্য থাকে না। সংসদ সদস্যরা তখন মুখ খুলতে ভয় পান, দলেও আতঙ্ক কাজ করে।”

তাহেরের মতে, “প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা একজন হতে পারেন, তবে একই ব্যক্তি দলের প্রধান থাকা উচিত নয়। এতে দলীয় নেতৃত্বে বিকাশের সুযোগ তৈরি হবে এবং রাজনৈতিক কাঠামো ভারস্যমূলক হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা বলছি না যে এই প্রস্তাবগুলো স্থায়ীভাবে রাখতে হবে। এটা তো কুরআনের আয়াত নয় যে চিরন্তন। বর্তমান সংকট উত্তরণে প্রয়োজনীয় অস্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করাই আমাদের উদ্দেশ্য।”

সংলাপ শেষে তাহের বলেন, “রাজনীতিকে থামিয়ে দিতে বলছি না, বলছি সাময়িক বিরতি দিয়ে ভুলগুলো শোধরানোর পর আবার ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতিতে ফিরে যেতে।”


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন