শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে রক্তাক্ত সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ৪

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে অন্তত চার জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮), টুঙ্গীপাড়ার সোহেল রানা (৩০) এবং গোপালগঞ্জ সদরের ইমন (২৪)।

গোপালগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে পুলিশ এবং সাংবাদিকও রয়েছেন। বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।”

সংঘর্ষের শুরু

প্রত্যক্ষদর্শী এবং এনসিপি নেতাদের অভিযোগ, রাষ্ট্র সংস্কার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং জুলাই গণহত্যার বিচার দাবিতে আয়োজিত এনসিপির সমাবেশে হঠাৎ নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। “জয় বাংলা” স্লোগান দিতে দিতে তারা সমাবেশ মঞ্চে চড়াও হয়।

এই সময় সাউন্ড সিস্টেম, মাইক, চেয়ার ভাঙচুর করা হয় এবং উপস্থিত নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণও ঘটায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগের হামলার মুখে এনসিপির শীর্ষ নেতারা গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।

পুলিশের পদক্ষেপ

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। হামলাকারীরা পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের গাড়িবহরের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।

এ ঘটনায় পুরো শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন দুপুরেই পুরো এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

এনসিপির প্রতিক্রিয়া

এনসিপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, “সরকার সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। রাষ্ট্র সংস্কার এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আওয়াজ তুললেই হামলা হচ্ছে। গোপালগঞ্জে যে হামলা হলো, সেটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসারই অংশ।”

এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা জাবেদ রাসিম বলেছেন, “রাষ্ট্রীয় মদদে একাংশের এই সন্ত্রাস গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকি। আমাদের কর্মসূচি ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। অথচ আমাদের ওপর ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।”

এখনো গোপালগঞ্জ শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন