শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস উপস্থাপনে জোর প্রধান উপদেষ্টার

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ব্যয়ে ‘অতিরঞ্জিত তথ্য’ উপস্থাপনের অভিযোগ, ট্রাস্টের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় নির্দেশনা

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের মাধ্যমে পক্ষপাতহীনভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস উপস্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে মন্ত্রণালয় বিভিন্ন স্থাপনা ও অবকাঠামো নির্মাণ করলেও সেখানে মুক্তিযুদ্ধের বিভ্রান্তিকর ইতিহাস উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এসব অবকাঠামোতে রণাঙ্গনের কোনো বিস্তৃত বর্ণনা নেই, মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প নেই। শুধু একটি পরিবারের ছবি-সরঞ্জাম দিয়ে অতিরঞ্জিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।”

তিনি উদাহরণ টেনে জানান, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রকল্পের জন্য ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও প্রকৃতপক্ষে কোনো উল্লেখযোগ্য গবেষণা হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা আরও অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধাভোগী শ্রেণি হিসেবে তৈরি করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত সম্পদ, সুযোগ-সুবিধা এবং অর্থ দলীয়করণ করা হয়েছিল। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তৈরি অবকাঠামো আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।”

মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মালিকানাধীন অরক্ষিত সম্পত্তি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “এই সম্পত্তিগুলো অত্যন্ত মূল্যবান। কীভাবে এগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার করা যায়, তা নির্ধারণ করতে হবে।”

বৈঠকে ফারুক ই আজম জানান, কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে থাকা সম্পদের সদ্ব্যবহার এবং ট্রাস্টের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নির্ধারণে দ্রুত একজন পরামর্শক নিয়োগ এবং পরবর্তী সময়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “কল্যাণ ট্রাস্টের কাজ কী হবে, তাদের আওতায় থাকা সম্পত্তিগুলোতে কী ধরনের এন্টারপ্রাইজ গড়ে তোলা যায়, তা নিরূপণ করে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। এই ট্রাস্টকে আবার জীবন্ত করতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা সভায় বলেন, “আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সব প্রকল্পের মাধ্যমে যেন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস স্পষ্টভাবে উপস্থাপিত হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।”

বৈঠকে বর্তমান সরকারের সময়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত এবং বাস্তবায়িত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম, পাশাপাশি আগামী ছয় মাসের কর্মপরিকল্পনা প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্টরা।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন