শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক মর্যাদা দিতে হবে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “আমরা জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও যোদ্ধাদের সঠিক মর্যাদা দিতে চাই। এই জুলাই-আগস্টেই তাদের সম্মান জানাতে হবে।” শনিবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনা সভা ও বিশেষ অনুষ্ঠানের ভেন্যু পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী জানান, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে আগামী ১ জুলাই সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং শহীদ পরিবারের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, “আমরা ১ জুলাইকে কেন্দ্র করে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমরা যথাযথভাবে কর্মসূচি পালন করতে চাই। যাদের সন্তানেরা গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাদেরকে বিশেষ সম্মান জানাতে হবে। সেই প্রত্যয়ে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জুলাই আন্দোলনে সারাদেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।”

ভেন্যু পরিদর্শন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস পালনের জন্য প্রথম কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি হিসেবে আমরা এই পরিদর্শন করেছি। অনুষ্ঠানের ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখতে এবং শহীদ পরিবারের সদস্য ও অতিথিদের জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা রাখতে আমাদের এ উদ্যোগ।”

রিজভী আরও বলেন, “জাতির অনেক অর্জনের মধ্যে জুলাই বিপ্লব একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। আমরা এর প্রথম বর্ষপূর্তি পালন করতে যাচ্ছি। আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেটি সাধারণ মানুষের স্বপ্নের বাংলাদেশ—যেখানে সবাই নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারে।”

অর্থনীতি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “আমাদের অর্থনীতি ও সামাজিক সংকট রয়েছে। মব কালচার বিদ্যমান। এসব থেকে মুক্ত হতে হবে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে। গত বছর প্রবৃদ্ধি ছিল ৪.২ শতাংশ, এবার তা নেমেছে ৩.৯ শতাংশে। আমরা সরকারকে এসব বিষয়ে দৃষ্টি দিতে বলছি। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। আশা করি, নির্বাচন কমিশন দ্রুত একটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “বিগত অগণতান্ত্রিক সরকার দেশের অর্থ লোপাট করেছে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। নির্বাচন কমিশন এবং গণমাধ্যমও এর শিকার। তারা কখনো প্রকৃত গণতন্ত্র চায়নি। জনগণ বিশ্বাস করে, ড. ইউনূস দেশবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “জুলাই বিপ্লবকে স্মরণীয় করে রাখতে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমাদের দাবি ও প্রত্যাশা, খুব শিগগিরই শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হবে। জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচিত হবে। আমরা বিশ্বাস করি, সেই নির্বাচনে জনগণের দল হিসেবে বিএনপি বিজয়ী হবে এবং জনগণের সরকার গঠন করবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা শহীদ ও আহত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। একটি কমিশন বা সংস্থার মাধ্যমে শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমাদের এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”

এ সময় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির সদস্য সচিব ও গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মাহদী আমিন, ড. তৌফিকুল ইসলাম মিথিল, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, ফারজানা শারমিন পুতুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন