ঢাবি সাদা দলের সেমিনারে ড. মঈন খান:
- নিজস্ব সংবাদদাতা
- জুন ১৯, ২০২৫
“বিগত সরকার পরিকল্পিতভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, “গত ১৭ বছরে পরিকল্পিতভাবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। আজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্কুলে যায় না, কিন্তু দোষ তাদের নয়—এটি সরকারের পরিকল্পিত অপচেষ্টা।” তিনি বলেন, “বিগত সরকার হয়তো চেয়েছিলো, জাতিকে মূর্খ করে রাখতেই।”
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘সাদা দল’। এটি ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির অংশ।
ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম।
ড. মঈন খান বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে শিক্ষাক্ষেত্রে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা উপবৃত্তিসহ নানা উদ্যোগের মাধ্যমে স্পষ্ট। বিপরীতে আজ শিক্ষাকে উপেক্ষা করে জাতিকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “জিয়াউর রহমান ক্যান্টনমেন্ট থেকে দল করলেও তিনি দেশের মানুষকে সুশিক্ষা দিতে চেয়েছেন, তাই বহু শিক্ষামুখী কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন।”
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “শহীদ জিয়া ছিলেন গণমুখী শিক্ষার প্রবক্তা। তিনি কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেননি, বরং শিক্ষার্থীদের কথা শুনতেন।” তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার শাসনামলে এই চর্চার বিপরীত চিত্র আমরা দেখছি, যেখানে ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে।”
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান। তিনি বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন ভবিষ্যতমুখী রাষ্ট্রনায়ক। তার গৃহীত শিক্ষানীতি ও বাস্তবমুখী কর্মসূচিগুলো বাংলাদেশে শিক্ষাব্যবস্থার কাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।”
তিনি বলেন, “জিয়া শিক্ষাকে দেখতেন কেবল ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যম হিসেবে নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধ, জাতীয় চেতনা এবং স্বাধীনতার মূল আদর্শ ধারণ করার প্রক্রিয়া হিসেবে। তার শিক্ষাদর্শন ধর্মীয় মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে গঠিত হয়েছিল।”
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, “গত ১৭ বছরে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ হবে জ্ঞাননির্ভর। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছেন, তাতেও শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।”
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার, অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, অধ্যাপক এম এ কাউসারসহ ঢাকা ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, ভিসি, প্রোভিসি ও প্রায় ৫০০ শিক্ষক-কর্মকর্তা।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ইউট্যাব প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এসএম সোহাগ আউয়াল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার।
ড. মঈন খান তার বক্তব্যে আরও বলেন, “আজ যারা বিশ্বে এগিয়ে, তারা শুধু অস্ত্র নয়, জ্ঞান ও গবেষণার মাধ্যমে শক্তিশালী হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বসেরা, কারণ তারা মেধাকে গুরুত্ব দেয়। আমাদেরও সেই পথেই এগোতে হবে, যদি সত্যিকারের উন্নত জাতি গড়তে চাই।”
এই বিভাগের আরও খবর
৪৫তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৮ জুলাই
- ৭ ঘণ্টা আগে