শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: তদন্ত শেষের নির্দেশ, চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।

রোববার (১৫ জুন) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে মামলার চার আসামিকে আলাদা দিনে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

আদালতের আদেশ অনুযায়ী, পুলিশের সাবেক এএসআই আমির হোসেন ও সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর এস এম মঈনুল করিম। তিনি জানান, “এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে, আমরা আশা করছি দুই সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।” শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলামসহ অন্যান্য প্রসিকিউটরগণ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও রাশেদুল হক খোকন।

এর আগে সকালেই মামলার চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন—

  • বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম
  • পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন
  • সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়
  • নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশ

পটভূমি

২০১৮ সালের ১৬ জুলাই দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী সাঈদ ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের রংপুর অঞ্চলের অন্যতম মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে সক্রিয় ছিলেন।

ঘটনার প্রায় সাত বছর পর গত মার্চে আবু সাঈদ হত্যাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে মামলা করে প্রসিকিউশন। এরপর চার আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং আদালত তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

আন্দোলনকারীদের ভাষ্যে, এই হত্যাকাণ্ড ছিল পরিকল্পিত এবং রাষ্ট্রীয় ছত্রচ্ছায়ায় সংঘটিত। মামলার দ্রুত তদন্ত শেষ করে বিচার শুরুর জন্য ভুক্তভোগী পরিবার ও ছাত্র সমাজ বারবার দাবি জানিয়ে আসছিল।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন