শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় ১ জন বাদে কেউ বেঁচে নেই, নিহত ২৪২ জন

ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের ১ জন বাদে সব আরোহী নিহত হয়েছেন। বিমানের ১১এ নম্বর আসনের যাত্রী বিশ্বাস কুমার রমেশ সৌভাগ‍্যক্রমে বেঁচে গেছেন। তিনি ভারতীয় ব্রিটিশ নাগরিক। পুলিশ কমিশনার জানান, ব্রিটিশ নাগরিক রমেশ বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া বিবৃতিতে কমিশনার মালিক বলেন, “তিনি বেঁচে আছেন এবং চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। আমরা নিশ্চিত হয়েছি তিনি ফ্লাইটটিতে ছিলেন।”
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ফ্লাইট এআই১৭১ বিধ্বস্ত হয়। বিমানটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, যাদের মধ্যে ২ জন পাইলট, ১০ জন কেবিন ক্রু এবং ২৩০ জন যাত্রী ছিলেন।

দুর্ঘটনার পরপরই ভারতের পুলিশ ও জরুরি সেবা সংস্থাগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। তবে আহমেদাবাদ শহরের এক আবাসিক এলাকায় ভেঙে পড়া উড়োজাহাজটির ধ্বংসস্তূপ থেকে কোনো আরোহীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছিল ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫২ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডীয় নাগরিক।

দুর্ঘটনার পর ফ্লাইট রাডার থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই উড়োজাহাজটি থেকে সংকেত পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। তখন এটি মাত্র ৬২৫ ফুট উচ্চতায় ছিল। এরপর বিমানটি সরাসরি মেঘানিনগরের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকট বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশ, এবং মুহূর্তেই আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ঘন কালো ধোঁয়া।

এ দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রাখছেন এবং উদ্ধার ও তদন্ত কাজ যেন দ্রুত সম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও এই দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

ফ্লাইটটির যান্ত্রিক ত্রুটি, বৈরি আবহাওয়া কিংবা মানবিক ভুল—কোনটি এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী তা নিশ্চিত করতে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (DGCA)।

এখনও পর্যন্ত বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা হয়নি। উদ্ধারকাজে জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (NDRF), পুলিশ ও সেনা সদস্যরা যৌথভাবে কাজ করছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাত্রী ও তাদের পরিবারের প্রতি আমরা গভীর শোক ও সহানুভূতি প্রকাশ করছি। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন