শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সম্পত্তি জব্দ

১২ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী এবং ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যভিত্তিক সম্পত্তি জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (NCA)। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বুধবার (১১ জুন) এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।

বাংলাদেশের আবেদনে যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপ

আল জাজিরার অনুসন্ধানী শাখা আই-ইউনিটকে দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থার একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেন, “চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন একাধিক সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।” এতে তিনি এখন এসব সম্পদ হস্তান্তর বা বিক্রি করতে পারবেন না।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে এবং অর্থপাচারের অভিযোগের তদন্তে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করে এনসিএ। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও অপরাধ তদন্ত সংস্থা এই তদন্তে সমন্বয় করছে।

লন্ডনে বিলাসবহুল বাড়িও জব্দের তালিকায়

আল জাজিরা জানায়, লন্ডনের অভিজাত সেন্ট জনস উড এলাকায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন একটি ১১ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বিলাসবহুল বাড়ি ইতোমধ্যে জব্দের তালিকায় রয়েছে। ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের গোপনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে ওই বাড়ির অভ্যন্তরের চিত্রও দেখা যায়, যা তার রাজনৈতিক পদে থাকার সময়েই অর্জিত বলে দাবি করেছে আল জাজিরা।

২০২৪ সালে আল জাজিরা প্রথম তথ্য প্রকাশ করে জানায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে অন্তত ৩৫০টির বেশি সম্পত্তি রয়েছে, যার বেশিরভাগই লন্ডনে অবস্থিত।

হাসিনার ‘ছেলের মতো’ দাবি

সাইফুজ্জামান চৌধুরী আল জাজিরার গোপন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের উল্লেখ করে বলেন, “আমি আসলে তার ছেলের মতো।” তিনি আরও বলেন, তার লন্ডনের ব্যবসা সম্পর্কে শেখ হাসিনা অবগত ছিলেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের আন্তর্জাতিক সম্পদ, দামি স্যুট এবং বিলাসবহুল চামড়ার জুতার প্রতি আগ্রহের কথাও প্রকাশ করেন।

ইউনূসের সফরের প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা

এনসিএ এই পদক্ষেপ নিল এমন সময়, যখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্যে সরকারি সফরে রয়েছেন। ড. ইউনূস তাঁর সফরে দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতা চেয়ে আসছেন।

এনসিএ’র এই পদক্ষেপকে বাংলাদেশের পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।

তদন্ত চলছে

বর্তমানে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থপাচার সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এনসিএ’র বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ধারাবাহিকভাবে নেওয়া হবে।

সূত্র: আল জাজিরা, NCA, ফিনান্সিয়াল টাইমস


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন