শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ অনুরোধে সাড়া দেননি বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার

ড. ইউনূস বললেন, “চুরির টাকাই ফেরত চাই”

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের জন্য অনুরোধ জানালেও সেই অনুরোধে সাড়া দেয়নি নতুন গঠিত লেবার পার্টি সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ব্রিটেনভিত্তিক প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস।

ব্রিটিশ সরকারের সহায়তায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে পাচার হওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলার দেশে ফেরত আনার উদ্যোগের অংশ হিসেবে স্টারমারের সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাতের পরিকল্পনা ছিল বলে সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী স্টারমার এমন একটি বৈঠকের সম্মতি দেননি।

বৃটেনের নৈতিক দায়িত্ব: ড. ইউনূস

ফিনান্সিয়াল টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাজ্যের সহায়তা পাওয়া উচিত। এটি তাদের নৈতিক দায়িত্ব, কারণ এ অর্থের বড় একটি অংশ বৃটেনেই রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমি কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সরাসরি কোনো বৈঠক করিনি। তবে আমি আশা করছি, তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবেন এবং বাংলাদেশের পাশে থাকবেন। কারণ এসব অর্থ জনগণের, এগুলো চুরির টাকা।”

বৃটিশ সরকার সাক্ষাৎ এড়িয়ে গেল

বৃটিশ সরকারের একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, কিয়ার স্টারমারের বর্তমানে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করার কোনো পরিকল্পনা নেই। বিষয়টি নিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে ড. ইউনূস বলেছেন, বৃটেন ইতোমধ্যে কিছু সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই সহায়তা বাড়বে। “এবারের লন্ডন সফরের মূল উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তরাজ্য সরকারের কাছ থেকে আরও জোরালো সমর্থন আদায় করা, যাতে পাচার হওয়া জনগণের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়,” বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত

বিগত এক দশকে বাংলাদেশের সাবেক শাসনামলে পাচার হওয়া অর্থ নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা তদন্ত ও আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ থেকে অবৈধ উপায়ে শত শত কোটি ডলার পাচার হয়ে ইউরোপ, কানাডা, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাজ্যে প্রবাহিত হয়েছে। এসব অর্থ ফেরতের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃটেনের মতো অর্থনৈতিক হাবে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়া দীর্ঘ হলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে তা দ্রুত সম্ভব। তবে স্টারমার সরকারের নীরব প্রতিক্রিয়া এ ক্ষেত্রে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন