শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

এপ্রিলেই নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পেছনে তিনটি কারণ ব্যাখ্যা করলেন প্রেস সচিব

পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ইঙ্গিত দেওয়ার পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে বিএনপি ও কয়েকটি রাজনৈতিক দল এপ্রিলকে ভোটগ্রহণের জন্য অনুকূল সময় হিসেবে দেখছে না। এই প্রেক্ষাপটে রবিবার (৮ জুন) রাতে এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, নির্বাচনকাল নির্ধারণের পেছনে তিনটি মূল বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে—সংস্কার, বিচার (ট্রায়াল) এবং নির্বাচন।

শফিকুল আলম জানান, জাতীয় নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ১২ থেকে ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশনের রিপোর্ট হাতে আসছে এবং তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, “এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি তৈরি করতে চাই আমরা।”

২০২৫ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে প্রেস সচিব বলেন, “সেসময় যে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড হয়েছে, যেখানে ৪ থেকে ৬ বছরের শিশুরাও নিহত হয়েছে—তার বিচার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে চাই।” তিনি যোগ করেন, “এই বিচার আন্তর্জাতিক মান এবং ডিউ প্রসেস মেনেই হবে, যেন কারও অধিকার ক্ষুণ্ন না হয়।”

শফিকুল আলম বলেন, “আমরা চাই একটি নিরপেক্ষ, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন। এজন্য প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে, এবং এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য সেই প্রস্তুতিকে সময় দিতে।”

কিছু রাজনৈতিক দল এপ্রিল মাসের গরম ও কালবৈশাখীর কথা উল্লেখ করে নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও, প্রেস সচিব বলেন, “আমরা আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, এপ্রিলের প্রথম ১০ দিন তাপমাত্রা তুলনামূলক সহনীয় এবং বড় ধরনের হিট ওয়েভ থাকে না।” তিনি আরও বলেন, “কালবৈশাখী মূলত বৈশাখ মাসেই বেশি হয় এবং এপ্রিলের দ্বিতীয়ার্ধে তা বেড়ে যায়। প্রথমার্ধে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে সীমিত থাকে, দেশব্যাপী নয়।”

প্রেস সচিবের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নির্বাচন আয়োজনে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি সময়োপযোগী ও বাস্তবভিত্তিক। তিনটি স্তম্ভ—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—নির্বাচনের আগে জাতীয় আস্থার জন্য অপরিহার্য বিবেচিত হচ্ছে। তবে এই ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া ও অংশগ্রহণের চূড়ান্ত অবস্থান আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও স্পষ্ট হবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন