শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ধামরাইয়ে পারিবারিক কলহ থেকে নির্মম ট্রিপল মার্ডার: মেয়ের জামাই রবিন গ্রেফতার

ঢাকার ধামরাইয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে এক মর্মান্তিক ট্রিপল মার্ডার ঘটিয়েছে মেয়ের জামাই। নিহত হন এক নারী ও তাঁর দুই ছেলে। ঘটনার তিনদিন পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে ঘাতক জামাই রবিনকে গ্রেফতার করেছে।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামের নার্গিস বেগম (৩৭) এবং তাঁর দুই ছেলে—শামীম (১৬) ও সোলাইমান (৬) গত ১ জুন রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরদিন দুপুরে তাদের লাশ খাটের উপর কাঁথা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনরা। ঘরের টিনের বেড়ার দরজা খুলে ঘাতক রাতের আঁধারে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর নার্গিস বেগমের ভাই মো. আব্দুর রশিদ ধামরাই থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি তদন্তে নেয় পিবিআই।

তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মেয়ের জামাই রবিন (২২) পারিবারিক কলহের জেরে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। নিহত নার্গিসের স্বামী রাজা মিয়া এক বছর আগে মারা যান। তার ডেকোরেশন ব্যবসা দেখভাল নিয়ে জামাইয়ের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধ থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করে রবিন।

পিবিআই জানায়, ১ জুন রাত সাড়ে ১১টা থেকে ২ জুন ভোর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে রবিন প্রথমে শ্যালক শামীমকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে। পরে শাশুড়ি নার্গিস ও ছোট শ্যালক সোলাইমানকেও একই কায়দায় হত্যা করে তিনজনের লাশ একটি খাটে পাশাপাশি শুইয়ে কাঁথা দিয়ে ঢেকে দেয়। ভোরে সে নিজ বাড়িতে ফিরে যায়।

পরদিন দুপুরে রবিনের স্ত্রী নাসরিন নিজ বাড়িতে গিয়ে মায়ের ও দুই ভাইয়ের নিথর দেহ আবিষ্কার করেন। পিবিআই তদন্তে রবিনকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করে। গ্রেফতারের পর রবিন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।

পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ কুদরত-ই-খুদা জানান, “শ্বশুরের মৃত্যুর পর ব্যবসা পরিচালনা নিয়ে যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, তারই পরিণতি এই নৃশংস ট্রিপল মার্ডার।”

তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ মঞ্জুর রহমান।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন