শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

‘মানবিক করিডর’ নিয়ে হেফাজতের উদ্বেগ: ঐকমত্য ছাড়া সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তথাকথিত ‘মানবিক করিডর’ স্থাপন পরিকল্পনার খবরে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে সাফ জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি তারা কখনোই মেনে নেবে না।

শুক্রবার (১৬ মে) হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এই অবস্থান জানানো হয়। বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠান সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্যোগে একটি মানবিক করিডর তৈরির যে প্রস্তাব চলছে, সেখানে বাংলাদেশকে যুক্ত করার গুঞ্জনে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত এই উদ্যোগ মানবিক সহায়তার ছায়ায় আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন হেফাজতের নেতারা।

তারা মন্তব্য করেন, “এই করিডরের মাধ্যমে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো উপকৃত হবে, যা কেবল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নয়—বাংলাদেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতি-কে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।”

হেফাজতের নেতারা অভিযোগ করেন, এই ধরনের একটি সংবেদনশীল বিষয়ে এখন পর্যন্ত জাতীয়ভাবে কোনো সংসদীয় আলোচনা, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ বা জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি। তারা সাফ জানিয়ে দেন, “জাতীয় পরামর্শ ও সর্বদলীয় ঐকমত্য ছাড়া এই জাতীয় পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।”

এছাড়া বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলা হয়, রাখাইন করিডর সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা বা বিদেশি পক্ষের সঙ্গে ইতিমধ্যে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে কি না। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তারা পরিষ্কার ব্যাখ্যা চান এবং জাতির সামনে অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানান।

হেফাজতের এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এল, যখন সম্প্রতি মিডিয়ায় রাখাইন রাজ্যে একটি আন্তর্জাতিক মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব এবং তাতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য আসেনি।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন