বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

এআই চিপ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে ট্রাম্প প্রশাসন, চীনের সঙ্গে প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় নতুন মোড়

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি বাইডেন আমলের শেষ দিকে চালু হওয়া বিতর্কিত AI চিপ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বাতিল করবেন। এই সিদ্ধান্ত বিশ্বের প্রযুক্তি খাতে এক নতুন মোড় আনতে পারে, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিপের সরবরাহ ও নিয়ন্ত্রণে। প্রযুক্তি খাতের অনেক প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই এই বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল, বিশেষ করে Microsoft ও Nvidia।

সিনেট কমিটির এক শুনানিতে মার্কিন সেনেটর টেড ক্রুজ বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়মের বিরুদ্ধে ছিলেন এবং নতুনভাবে একটি “AI রেগুলেটরি স্যান্ডবক্স” তৈরির বিল উত্থাপন করবেন। এই শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন OpenAI-এর সিইও স্যাম অল্টম্যান, AMD-এর লিসা সু, Microsoft প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ এবং CoreWeave-এর মাইকেল ইনট্রেটর। অল্টম্যান বলেন, অ্যাপল টেক্সাসে বিশ্বের বৃহত্তম AI প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের AI সক্ষমতা আরও বাড়াবে।এই নিষেধাজ্ঞাগুলি মূলত তিনটি স্তরে বিভক্ত ছিল। প্রথম স্তরে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপানসহ কয়েকটি মিত্র দেশ ছিল যেখানে কম বিধিনিষেধ ছিল, আর চীন ও রাশিয়া ছিল সবচেয়ে কঠোর নিয়ন্ত্রিত তালিকায়। কিন্তু দ্বিতীয় স্তরের দেশগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন Microsoft-এর ব্র্যাড স্মিথ। তিনি বলেন, এসব দেশ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের দিকেই ঝুঁকে যেতে পারে।AI নিয়ে এই শুনানিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে নৈতিকতা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হয়। সম্প্রতি এক কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনায় AI চ্যাটবট জড়িত ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। অল্টম্যান বলেন, “AI ও সামাজিক সম্পর্ক একটি নতুন বিষয়, আমাদের এটি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।” তিনি শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরির জন্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন।ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই প্রযুক্তি খাতে কম নিয়ন্ত্রণে বিশ্বাসী। উপ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স বলেন, “অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ AI শিল্পকে গলা টিপে হত্যা করতে পারে।” ট্রাম্প এআই ও প্রযুক্তি উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রকে শীর্ষে রাখতে চান এবং এজন্য TSMC ও Apple-এর মতো প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকে বড় অর্জন বলে উল্লেখ করেন।চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে AI প্রতিযোগিতা আরও বাড়ছে। চীনের DeepSeek নামের একটি কোম্পানি তাদের সাশ্রয়ী AI মডেল R1 দিয়ে প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন তোলে। এটি OpenAI-এর শক্তিশালী মডেলের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে, তাও অনেক কম খরচে।Microsoft-এর স্মিথ বলেন, “এই প্রতিযোগিতায় কে জিতবে তা নির্ধারিত হবে এই ভিত্তিতে—কার প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়।” তাই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক প্রযুক্তি নেতৃত্ব বজায় রাখার এক কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন