শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ফিলিস্তিনে আরেক ‘নাকবা’র আশঙ্কা: জাতিসংঘের বিশেষ কমিটির সতর্কবার্তা

প্রান্তকাল ডেস্ক | ১০ মে ২০২৫, শনিবার

ফিলিস্তিনে চলছে জাতিগত নিধন ও জবরদখলের পরিকল্পিত নীতিমালা, এমন গুরুতর অভিযোগ করেছে জাতিসংঘের একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি। গাজা উপত্যকার উত্তরে লক্ষ লক্ষ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করে শিবিরে আটকে রাখার ইসরায়েলি পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের ওই কমিটি বলছে, “বিশ্ব হয়তো আরেক নাকবার সাক্ষী হতে চলেছে।”

“নাকবা” বা বিপর্যয় শব্দটি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় প্রায় ৭ লাখ ৬০ হাজার ফিলিস্তিনির জোরপূর্বক উচ্ছেদের ঘটনাকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। আজকের বাস্তবতা যেন সেই ইতিহাসেরই ভয়াবহ পুনরাবৃত্তি।

জাতিসংঘের ‘Special Committee to Investigate Israeli Practices Affecting the Human Rights of the Palestinian People and Other Arabs of the Occupied Territories’ শুক্রবার জানায়,
“ইসরায়েল বর্তমানে দখলকৃত এলাকায় বসবাসরত জনগণের ওপর অকল্পনীয় দুঃখ-কষ্ট চাপিয়ে দিচ্ছে। ভূমি দখল এবং সামরিক অভিযান মূলত উপনিবেশ সম্প্রসারণের ছদ্মবেশ।”

কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী,
“সুরক্ষা অভিযানের নামে ভূমি দখল, উচ্ছেদ, ঘরবাড়ি ধ্বংস, জবরদখল এবং ইহুদি বসতি স্থাপন পরিকল্পিতভাবে চালানো হচ্ছে। লক্ষ্য—ফিলিস্তিনি জনগণকে সরিয়ে দিয়ে ইহুদি বসতিগুলোর সম্প্রসারণ।”

কমিটি আরও অভিযোগ করে,
“ইসরায়েলি কারাগার ও সামরিক ডিটেনশন ক্যাম্পগুলোতে যৌন সহিংসতাসহ নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ এবং শাস্তি নিয়মিত ও পরিকল্পিতভাবে চালানো হয়। এটি একটি ভয় সৃষ্টির কৌশল, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”

এই তদন্ত মিশনের সময় গাজা উপত্যকায় সাহায্য সামগ্রীর প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ ছিল।
কমিটির ভাষায়,
“কয়েক কিলোমিটার দূরেই খাদ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি সরকার কিভাবে পরিকল্পিতভাবে পুরো জনগোষ্ঠীকে অনাহারে মারতে চায়—তা ভাবা যায় না। কিন্তু গাজার জনগণের জন্য সেটিই এখন বাস্তবতা।”

প্রসঙ্গত, এই জাতিসংঘ কমিটি গঠিত হয়েছিল ১৯৬৮ সালে এবং বর্তমানে এটি পরিচালনা করছেন শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও সেনেগালের রাষ্ট্রদূতরা।

বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রতিবেদনের গুরুত্ব শুধু গাজার মানবিক সংকট নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে একটি ভয়াবহ জাতিগত বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করছে, যা সারা বিশ্বকে নাড়া দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন