শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আগামী মাসেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় জামায়াতে ইসলামি

শূরা অধিবেশনে ডা. শফিকুর রহমানের আহ্বান—“আলোচনার মাধ্যমেই সংকটের সমাধান সম্ভব”

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচন যেন জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন হয়, সেজন্য এখনই নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার সম্পন্ন করে আগামী জুন মাসেই রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর মগবাজারের আল-৭ মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার এক অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “বিগত আমলে নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। আগামীতে এমন একটি নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।”

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “চলতি মে মাসের মধ্যেই প্রয়োজনীয় নির্বাচন সংস্কার শেষ করা হোক এবং আগামী জুন মাসে একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরা হোক।” তিনি আরও বলেন, “বিগত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ দেশের মানুষকে উদ্বিগ্ন করেছে। কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার। সমস্যার সমাধান আলোচনার মধ্যেই সম্ভব।”

জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে জামায়াতে ইসলামি যে কোনো সংলাপে বসতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জাতির মধ্যে যে উদ্বেগ ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তা পারস্পরিক আস্থা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত অভিযোগের বদলে গঠনমূলক ভূমিকা রাখা।”

আওয়ামী লীগের শাসনামলের বিচার নিয়ে তিনি বলেন, “দলটির শাসনামলে সংঘটিত অপকর্ম ও দুর্নীতির বিচার প্রক্রিয়া জনগণের সামনে দৃশ্যমান হতে হবে। তা যেন নিরপেক্ষ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিফলন হয়।” তিনি বলেন, “এই বিচার প্রক্রিয়া এখনো অস্পষ্ট, যা জনগণের আস্থায় ঘাটতি তৈরি করছে।”

মানবিক করিডোর ইস্যুতে তিনি বলেন, “এটি একটি অতিমাত্রায় স্পর্শকাতর বিষয়। এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সম্ভব হলে এটি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত।”

সেনাবাহিনী সম্পর্কে জামায়াতের আমির বলেন, “সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার অন্যতম স্তম্ভ। কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাদের বিতর্কিত করা উচিত নয়। তারা আমাদের জাতীয় গর্ব, তাদের নিরপেক্ষতা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।”

নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের প্রতি আস্থার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাই সরকার গঠনমূলক ভূমিকা পালন করুক। প্রয়োজনে বিরোধী দলগুলোকেও এ সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। কারণ, দেশের স্বার্থে সবাইকে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “কারও ভুল সিদ্ধান্ত বা ভুল বোঝাবুঝির কারণে যদি আবারও জাতি সংকটে পড়ে, তবে সেই দায় কেউ এড়াতে পারবে না।”

শেষে তিনি দুর্নীতিমুক্ত, মানবিক ও কল্যাণভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে জামায়াত ইসলামীকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। তার ভাষায়, “আমরা একটি স্বচ্ছ ও ন্যায়ের সমাজ গড়তে চাই, যেখানে মানুষ সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারবে। এই লক্ষ্যে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন