শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ড. ইউনূস পদত্যাগ করছেন না: শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য তার নেতৃত্ব অপরিহার্য — ফয়েজ তৈয়্যব

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করছেন না বলে জানিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী ও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

শুক্রবার (২৩ মে) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত এক স্ট্যাটাসে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি লিখেছেন, ড. ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমতার প্রতি আগ্রহী নন, তবে বাংলাদেশের একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য তার নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞাপন

নেতৃত্ব ছাড়াই অস্থিরতা সৃষ্টি হবে: মতামত দিলেন ফয়েজ
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না। অধ্যাপক ড. ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনের জন্য তার নেতৃত্ব প্রয়োজন।”

তিনি মনে করেন, এখন দরকার সরকারের কাঠামোকে আরও গতিশীল করে তোলা, উপদেষ্টাদের বেশি সক্রিয় করে দৃশ্যমান অগ্রগতি জনগণের সামনে তুলে ধরা। ফয়েজ বলেন, “আমাদের দেখাতে হবে যে, গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সরকার হিসেবে প্রফেসর ইউনূস সাফল্য দেখিয়েছেন।”

রাজনৈতিক সংলাপ জোরদার ও অংশগ্রহণমূলক হোক সরকার
ফয়েজ আহমদ মনে করেন, সরকারের উচিত এখন থেকে সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত ও নিবিড় সংলাপে বসা। তিনি বলেন, “তাদের মতামত নিতে হবে, কোনো বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে এই সংলাপ ও অংশগ্রহণই হতে পারে স্থিতিশীল নির্বাচনের ভিত্তি।

সেনাবাহিনী রাজনীতিতে জড়াবে না, তবে সম্মান পাবে
সামরিক বাহিনী প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “সেনাবাহিনী রাজনীতিতে নাক গলাবে না। আজকের দুনিয়ায় কোনো সভ্য দেশের সেনাবাহিনী রাজনীতি করে না।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধানের বক্তব্য ছিল এখতিয়ারের বাইরে। তবে সেনাবাহিনীকে যথার্থ সম্মান দিতে হবে এবং আস্থায় রাখতে হবে। হঠাৎ করে সেনাবাহিনী ইস্যুতে হঠকারী কিছু করা যাবে না।”

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা
ফয়েজ তৈয়্যব ইনক্লুসিভনেস বা অংশগ্রহণমূলক নীতির নাম করে আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের বিপক্ষে অবস্থান জানান। তিনি বলেন, “তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টাও জনগণ মেনে নেবে না।”

এই বক্তব্যে তিনি একদিকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ন্যায্যতার কথা বললেও অন্যদিকে ক্ষমতা অপব্যবহারকারী গোষ্ঠীর প্রত্যাবর্তন রুখে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

নির্বাচন এপ্রিল-মে’র মধ্যে, প্রস্তুতির নির্দেশ
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “সকল প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন এপ্রিল-মে’র মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করি।”

এই সময়ের মধ্যেই সব রাজনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নের তাগিদ দেন তিনি। বিশেষ করে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন, যা গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সংবিধানিক ও রাজনৈতিক রূপরেখার অংশ।

হাসিনার বিচার ও গণ-অভ্যুত্থান বার্ষিকী উদযাপনের ঘোষণা
ফয়েজ তৈয়্যব জানান, জুলাই-আগস্ট ২০২৫ সালে “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় উদ্‌যাপন অনুষ্ঠিত হবে।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, “আগস্টের মধ্যেই স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচারের প্রথম রায়টি আলোর মুখ দেখবে।”

শেষ বার্তা: ইনকিলাব ও গণজাগরণ
স্ট্যাটাসের শেষে ফয়েজ আহমদ বলেন:
“ইনশা আল্লাহ, আমরা হারব না। আমাদের হারানো যাবে না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ। প্রফেসর ইউনূস জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন