শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা রাহাত হোসেন গ্রেফতার


তথ্যসূত্র: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)

সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আওয়ামী লীগের একাধিকবার আলোচিত কট্টরপন্থী নেতা ডা. খন্দকার রাহাত হোসেন (৫৭) কে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তিনি সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর খালাতো ভাই এবং শেখ পরিবারের আস্থাভাজন হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর উত্তরা এয়ারপোর্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি-উত্তরা বিভাগের একটি বিশেষ অভিযানে অংশ নেওয়া চৌকস দল।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত ডা. রাহাত হোসেনের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় একটি মামলা রয়েছে, যেখানে তাকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় সক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ডিবি সূত্রে আরও জানা যায়, সম্প্রতি সরকারের নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলন ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার তথ্য-প্রমাণ গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আসে। এ বিষয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ডা. রাহাত হোসেনের রাজনৈতিক পরিচিতি এবং ক্ষমতাসীন দলের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে তার গ্রেফতার রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে।

ডিএমপি জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

প্রসঙ্গত: কে এই ডা. খন্দকার রাহাত হোসেন

ডা. খন্দকার রাহাত হোসেন এক সময় আওয়ামী লীগের কট্টর ঘরানার রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। পেশায় একজন চিকিৎসক হলেও দলীয় সাংগঠনিক কার্যক্রমে তার প্রভাব ছিল যথেষ্ট। তিনি সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর খালাতো ভাই এবং শেখ পরিবারের একাধিক সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতেন বলে রাজনৈতিক মহলে পরিচিত।

২০০০-এর দশকে ঢাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার দৃশ্যমান উপস্থিতি থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি আলোচনায় আসেন বিভিন্ন বিতর্কিত রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্যের কারণে। দলীয় নীতিমালার বাইরে গিয়ে একাধিকবার স্বাধীন মত প্রকাশ করায় তাকে কেন্দ্রীয় রাজনীতির মূলধারা থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্নও মনে করা হচ্ছিল।

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক বৈষম্য, রাজনৈতিক স্বচ্ছতা এবং সংস্কার দাবিতে সোচ্চার কিছু কর্মসূচির সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে আসে। রামপুরা থানায় দায়ের হওয়া মামলায়ও তাকে এসব কর্মকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তাঁর গ্রেফতার তাই শুধু একজন রাজনৈতিক কর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নয়, বরং ক্ষমতাসীন দলের ভেতরের মতবিরোধ ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রতিফলন হিসেবেও বিশ্লেষণ করছেন অনেকেই।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন