ঢাকা, ২০ মে ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা প্রকাশে ব্যর্থতা জানিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন লিখিত বক্তব্যে এ মত প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে ২০২২ সালের বিতর্কিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন’-এর ভিত্তিতে, যা একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের সৃষ্টি। এই আইন গৃহীত হওয়ার সময়ই বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ ও দল একে প্রত্যাখ্যান করেছিল।”

এনসিপি নেতার দাবি, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিশনের প্রস্তাবনার আগে নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে জনআস্থা বিনষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত প্রস্তাব বাতিল করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন যে পক্ষপাতদুষ্ট, তা স্পষ্ট হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আখতার হোসেন আরও বলেন, ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ‘অবৈধ নির্বাচন’-কে কেন্দ্র করে বর্তমানে যে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা। ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলায় নির্বাচন কমিশন নিজে বিবাদী হয়েও আদালতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি, বরং মামলার বাদীকে সুবিধা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “এই মামলার রায়ের আগেই গত ১৯ আগস্ট ডিএসসিসিতে প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে পুরো মামলাকে অকার্যকর করে ফেলা হয়। এরপর রাতারাতি গেজেট প্রকাশও প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত।” এনসিপির অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের আচরণ রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতার পরিপন্থী এবং একটি বড় রাজনৈতিক দলের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, “জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নও ঝুঁকির মুখে পড়েছে।” তিনি মনে করেন, সারাদেশে একই ধরনের অবৈধ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে যেসব মামলা হচ্ছে, তা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম জটিলতা সৃষ্টি করছে।

এনসিপি মনে করে, এই সংকট নিরসনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনই একমাত্র পথ, তবে বর্তমান পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন সেই দায়িত্ব পালন করতে অক্ষম। দলটি অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ, সর্বজনগ্রাহ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে।